Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
khaleda-ziaখোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬:  আগামী ৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে’ কেন্দ্র করে মাঠের কর্মসূচিতে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অথবা ঢাকার আশপাশের কোনো জেলায় দিবসটি উপলক্ষে জনসমাবেশ করা হতে পারে, যেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জানা গেছে, ৭ নভেম্বরের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন পরে বিএনপির মাঠের কর্মসূচির সূত্রপাত ঘটতে যাচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সমাবেশ করবেন বিএনপি প্রধান। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে জনমত গঠন ও নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

বিএনপি নেতারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাজা দেয়ার প্রচেষ্টার প্রতিবাদ ও ৫ জানুয়ারির মতো আবারো একটি সাজানো বা পাতানো নির্বাচনের আশঙ্কাসহ নানা ইস্যুর দিকেই থাকছে কর্মসূচির মূল ফোকাস। এরই মধ্যে বেগম জিয়ার নির্দেশনা তৃণমূলে পৌঁছে গেছে। ফলে দ্রুত তৃণমূলের কমিটিগুলো পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার ওপর জোর দিয়েছেন দায়িত্বশীলরা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান এ বিষয়ে বলেছেন, আমরা আন্দোলনের মধ্যেই আছি। চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আমরা দল পুনর্গঠন করছি। শিগগিরই কর্মসূচি আসছে, তা দেশের মানুষ দেখতে পাবে।
দলের যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা ডাকা হয়েছে। সভা শেষে বলা যাবে দল কী কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আর দল পুনর্গঠন নিয়ে বিএনপির কাজ এগিয়ে চলছে।
দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, চুপচাপ বসে থাকলে ফল ভালো হবে না। সরকার ৫ জানুয়ারির মতো আবারো একটি সাজানো বা পাতানো নির্বাচন করে ফেলতে পারে, এমন আলোচনাই চলছে সর্বত্র। পাশাপাশি মানিলন্ডারিং মামলায় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাত বছরের সাজা ও দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিচার করারও পাঁয়তারা চলছে। এই অবস্থায় মাঠে নামা ছাড়া বিকল্প নেই। দলটির নেতাদের যুক্তি, এতে সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নেয়ার যথার্থ হিসাব কষতে বাধ্য হবে।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ইস্যুটি বিএনপির কাছে এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমান কমিশনের মেয়াদ আছে আর মাত্র পাঁচ মাস। পরবর্তী নির্বাচন নতুন কমিশনের অধীনই হবে। বিএনপি কোনোভাবে একতরফাভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে দেবে না। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য কমিশন গঠনে সরকারকে বাধ্য করতে সব রকম চেষ্টা চালাবে তারা। নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেয়া হবে। এরপরও ক্ষমতাসীনরা যদি সবার মতামত উপেক্ষা করে বর্তমান কমিশনের মতো ফের পক্ষপাতমূলক নির্বাচন কমিশন গঠন করে তবে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি রাজপথে নামবে।
তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী মাঠের বিরোধী দল বিএনপি আগামী নির্বাচন নিয়ে ‘কট্টর’ কোনো অবস্থানে নেই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়ায় ওই নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলনে নেমেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। জানা গেছে, বিএনপি পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে মূলত আলোচনার পক্ষপাতী। এ ক্ষেত্রে কোনো পূর্বশর্তও নেই তাদের। আলোচনার টেবিলে বিএনপি যে দু’টি বিষয় ফোকাস করতে চায় তা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। সমঝোতার ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন নিশ্চিত হলে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিতে আপত্তি নেই দলটির।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, বিএনপি সব ধরনের পরিকল্পনা করছে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সরকারকে বাধ্য করার বিষয়ে। এ লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি করতে আন্দোলনের মাঠে নামার কথা ভাবা হচ্ছে। খালেদা জিয়া নিজেই মাঠে থেকে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন। এর অংশ হিসেবে নভেম্বর থেকে বিভিন্ন স্থানে জনসভা শুরু হবে।
পরবর্তী আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে হঠাতে হবে। শিগগির দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মাঠে নামবেন। দেশব্যাপী তিনি গণসংযোগ করবেন। আর গণসংযোগের মধ্য দিয়েই এই সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হবে।