খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের আমন্ত্রণ পেয়ে এ সম্মেলনকে স্বাগত জানালেও শাসকদলের দাওয়াত রক্ষা করেনি বিএনপি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা অবধি সম্মেলনে যাওয়ার ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও শেষ মুহূর্তে সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপির অন্তত ১০ জন দায়িত্বশীল নেতার কাছে জানতে চেয়ে ফোন দেওয়া হলেও তারা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্তত দুটি কারণে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন বিএনপির শীর্ষ নীতি নির্ধারকরা। একটি হচ্ছে, আগের রাতেই অন্য কয়েকটি দলের সম্মেলনে না যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া। এ খবর জানতে পেরে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঠিক করার পরেও চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তাদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ‘না’ মত জানিয়ে দেন।
অপর কারণটি হচ্ছে, গত মার্চে অনুষ্ঠিত বিএনপির কাউন্সিলকে এক ধরনের কোণঠাসা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কাউন্সিলের আগের দিনে অনুমতি দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার টানটান সময় বেঁধে দেওয়ার কৌশল করায় পূর্ণপ্রস্তুতি থেকে বঞ্চিত ছিল বিএনপি। তবে একটি সূত্র, প্রথম কারণটিকেই যুক্তিযুক্ত মনে করেছে।
বিএনপির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক শনিবার সকালে বলেন, ‘দলের কেউ (আওয়ামী লীগের সম্মেলনে) যাচ্ছে না এটাই শুনেছি।’ ছাত্রদলের একজন সহ-সভাপতি জানান, ‘মনে হয় না, যাবে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খানও জানান, যাবে কিনা, এ নিয়ে কোনও তথ্য আমার জানা নেই।
এর আগে শুক্রবার বিকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খালেদা জিয়ার নির্দেশ এলে বোঝা যাবে। যদিও শনিবার একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ করেননি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও।
শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে একটি সূত্র জানিয়েছিল, যে শামসুজ্জামান দুদু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন যাবেন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে। যদিও এ বিষয়ে তাদের তিনজনকেই ফোন করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিএনপি যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু জানি না। আমি ঢাকার বাইরে।’
সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ২০ তম সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী যাননি। তবে জাসদ (রব) সভাপতি আসম রব, বিকল্প ধারার সভাপতি বি. চৌধুরী ও মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, বত্রিশ দলীয় জোট নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, স্যার যাননি, এটা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি। গতরাতেই আমরা কালিহাটিতে প্রোগ্রাম করে ফিরেছি। যোগাযোগ করা হলে ড. কামাল হোসেন ফোন রিসিভ করেননি।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান জানান, ‘যারা গেছে, তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন নেই, কিন্তু যারা যাননি, তারা আওয়ামী লীগের কাছের হিসেবে পরিচিত।’
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে দলের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের উপ দফতর মৃণাল কান্তি দাসের নেতৃত্বে কাউন্সিলের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল।