খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘কায়ান্ট’ এর প্রভাবে দেশজুড়ে বিরুপ আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শুরু থেকেই বিচিত্র আচরণ করতে থাকা এই ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ পশ্চিমে সরে গিয়ে শুক্র বা শনিবার নাগাদ ভারতের অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ সকাল থেকেই রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ এই বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। বৃষ্টির ফলে যানজট সৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। সাতসকালে যাদের ঘরের বাইরে ছুটতে হয়েছে, তারা অনেকেই কাকভেজা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। যানবাহন কম থাকায় স্কুলগামী শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েন অভিভাবকেরা। নগরবাসী অনেকে বলছেন, এই বৃষ্টি শীতের আমেজ দিয়ে যাবে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উপকূলে আঘাত হানার আগেই ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও এর প্রভাবে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলে এবং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে ভারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার দাপট চলতে পারে আগামী দুদিন।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় পূর্বাভাস বিভাগের প্রধান এম মহাপাত্রের বরাত দিয়ে দি হিন্দু লিখেছে, “এই ঘূর্ণিঝড়টির উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম।”
২৯ অক্টোবর নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সানাউল হক খান জানিয়েছিলেন, কায়ান্টের বাংলাদেশ উপকূলের দিকে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। এর সম্ভাব্য গতিপথ ভারতের দিকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড় ‘কায়ান্ট’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।