খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ : মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রিকাবী বাজারের স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ভিডিও গেমস্ ও গানের দোকানে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের পরনে ছিল স্কুল ড্রেস আর কাঁধে ছিল স্কুলব্যাগ।
সরেজমিনে মিরকাদিম বাজারের আনিছ মিয়ার ভিডিও গেমস্ এর দোকানে গিয়ে দেখা যায়, বিনোদপুর স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র আবু সাঈদ, শুভ, আকিব, সালাম, আলামিনসহ ৭-৮ জন শিশু ছাত্র দোকানের পার্শ্বে সাইকেল তালা দিয়ে ভিডিও গেমস্ খেলছে। গেমস্ খেলার কারণ জিজ্ঞাস করার সাথে সাথে হুরমুড় করে তারা দোকান থেকে বেরিয়ে সাইকেল নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। পাশেই সুজন মিয়ার গেমস্ এর দোকান সেখানেও ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। একই বাজারের মিউজিক কর্নার দোকানে বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরা মোবাইলে ভিডিও গান লোড করছে। হঠাৎ ৭-৮ বছরের এক যুবক এসে দোকানদারকে ধমক দিয়ে বলেন, কি ভিডিও দিয়েছেন ভাল না দেখে মজা পাইনি। আরো উন্নত মানের ভিডিও দেন। পরে দোকানদার আরো কিছু পর্ণ ভিডিও মোবাইলে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর দোকানদারকে ২০ টাকা দিয়ে দ্রুত কেটে পড়েন।
এক দিকে যুব সমাজকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে মাদক। অপরদিকে কোমলমতি শিশুরা এভাবেই গেমস্ ও ভিডিও পর্ণ্যগ্রাফীর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এ জন্য সমাজের দুর্বল ব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন সুধী সমাজ।
স্থানীয় শত বছর বয়সী মুরুব্বি শহিদ বলেন, বর্তমানে ছেলে- মেয়েরা সমাজের মুরুব্বিদের কথা শুনবে দূরের কথা, বাবা মায়ের কথাইতো শোনেনা দূরের কথা। নিজের সন্তান কখন? কোথায়? কি করছে? সব বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া জরুরি। অন্যথায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হবে এবং সমাজে অবক্ষয় নেমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে পর্ণ ভিডিও বিক্রি ও গেমস্ খেলার বিষয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে দোকানি জুয়েল বলেন, এলাকার পোলাপান, না দিলে দোকান চালানো যাবেনা। তবে জানি এটা অপরাধ ভবিষ্যতে আর এমনটা না করার অঙ্গিকার করেন তিনি।
ভিডিও গেমস্ দোকানের মালিক সুমন ও আনিছ জানান, জানি এটা শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতি। স্কুল চলাকালীন সময়ে বাচ্চাদের আর দোকানে ঢুকতে দেবনা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্কুল পড়–য়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভিডিও পর্ণ ও ভিডিও গেমস্ থেকে দূরে সরাতে না পারলে সমাজ চরম অবক্ষয়ের কবলে পড়বে। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে মুন্সিগঞ্জের ভিডিও গেমস্ ও মোবাইল গান, রিংটোন ডাউনলোড ও মেমোরি ভরে দেওয়ার দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এদেরকে আইনের আওতায় এনে এসকল দোকানের কম্পিউটারগুলো জব্দ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন সমাজ।