Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

60খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৬: অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলির ক্ষমতা এককভাবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে না থাকায় ‘দ্বৈত শাসন’ সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল করে ১৯৭২ এর সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ ফেরাতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের নয় বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি এই মত দেন।
বাণীতে তিনি বলেন, সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদে অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর হাই কোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলা হয়েছে। কিন্তু ১১৬ অনুচ্ছেদে যে বিধান দেওয়া হয়েছে তা বিচার বিভাগরে ধীরগতির অন্যতম কারণ।
“এই অনুচ্ছেদ অনুসারে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্বৈত শাসনের ফলে বহু জেলায় শূন্য পদে সময়মত বিচারক নিয়োগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচার কাজে বিঘœ ঘটে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়।”
এই প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি পুনঃপ্রবর্তন করা ‘সময়ের দাবি’ বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি।
“সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিম কোর্টের উপর ন্যস্ত থাকবে। উক্ত বিধানটি পুনঃপ্রবর্তন করলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরও সমুন্নত ও সংহত হবে এবং বিচার বিভাগের সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে।”
বাংলাদেশের সংবিধান বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা প্রযুক্ত হবে।
আর ১৯৭২ সালের সংবিধানের এই ধারায় বলা ছিল, বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ সালে এক ফরমানের মাধ্যমে ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাতে নেওয়া হয়।
১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্টে সামরিক শাসন জারির পর থেকে ৬ এপ্রিল ১৯৭৯ পর্যন্ত সামরিক শাসনামলের সব আদেশ, ঘোষণা ও দণ্ডাদেশকে বৈধতা দ্য়ো সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী পরে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতিও ফিরিয়ে আনে। কিন্তু ১১৬ অনুচ্ছেদে বাহাত্তরের বিধান আর ফেরেনি।