খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৬ :
মুন্সিগঞ্জ :মুন্সিগঞ্জের টংগীবাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপ-ব্যবহার, সরকারী জায়গা দখল ও বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, টংগীবাড়ী থানাধীন বরলিয়া চৌরাস্তায় সরকারী রাস্তার পাশে জায়গা দখল করে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাহাত খাঁন রুবেল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরলিয়া চৌরাস্তার পশ্চিম পাশে একাধিক অবৈধ স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে। সেখানে ছোট বড় কয়েকটি অস্থায়ী টিনের তৈরী চায়ের দোকান এখনও রয়েছে। সেই দোকানগুলোর উপরে উঁচু উঁচু টিনের ভেড়া দিয়ে আড়াল তৈরী করা হয়। যাতে বাহির থেকে কিছু বোঝা না যায় ভিতরে কি করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে সেই ভেড়ার আড়ালে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করে পাকা স্থাপনা তৈরী শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে ভবনের ফাইন্ডেশন এবং পিলারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়রা টিনের দোকানের পিছনে পাঁকা পিলার দেখে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। টংগীবাড়ী ভূমি অফিস সুত্রে জানাযায়, আমতলী মৌজার ৪৭৮ নং- খতিয়ানের এসএ ৬৩২,সিএস ৬৩২ এবং আরএস ৬৯৯ দাগে ভিপি কেইস ২৩৭/৬৮ মূলে আলহাজ আবু হায়াত খানের নামে ১৭ শতাংশ জায়গা লিজ দেওয়া হয়েছে। যা বাংলা ১৪২২ সাল পর্যন্ত নবায়ন আছে। স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারী রাস্তার পাশে য়েখানে ভবন নির্মাণ হচ্ছে সেখানে কোন লিজ নেই এটা সরকারী জায়গা। লিজের মালিক ঢাকা থাকেন। লিজের অজুহাতে টংগীবাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরকারী জায়গা দখল করে স্থায়ীভাবে ভবন নির্মাণের মাধ্যমে জায়গাটি গ্রাস করতে চাচ্ছে। যার নামে লিজ আছে তার জায়গার পাশের সরকারী জায়গা এটি। এখানে কেবলমাত্র লিজপ্রাপ্ত ব্যক্তিরই ভোগ দখলের দাবিদার। তবে কোন স্থায়ী স্থাপনা তৈরী করে নয়।
দখল বিষয়ে টংগীবাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, জায়গাটা আমার চাচাতো ভাই আবু হায়াত খাঁনের নামে লিজ নেয়া। ভাই হিসাবে দোকান উঠানোর জন্য জায়গাটা চেয়ে নিয়েছি। কিভাবে নিলেন? জবাবে বলেন, ভাই ভাইকে দিতে পারেনা ঠিক সেভাবে নেওয়া হয়েছে। পিলার তৈরী করেছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়টি চিন্তা করে পিলার করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করা হয়েছে দাবি করে জমির লিজকারী আবু হায়াত খাঁন বলেন, আমি আর রুবেল চাচাতো ভাই আমাদের জয়েন্ট পরিবার আমরাই দোকান তুলতেছি। নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বলেছে সে সহকারী কমিশনার ভুমি অফিসারকে বলে দিবে যেন তিনি আর কোন ঝামেলা না করে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), টংগীবাড়ী আবেদা আফসারী জানান, লিজ নিলেও কোন স্থাপনা তৈরীর জন্য অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু সেখানে তারা বে- আইনিভাবে পাকা স্থাপনা তৈরী করলেও কোন অনুমোদন নেয়নি। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।
টংগীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল হক পাটোয়ারী বলেন, আমি লিজকারীকে চিনিনা এবং তার সাথে কোন দিন কথা হয়নি। কেউ যদি সরকারী জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরী করে তদন্তের মাধ্যমে প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সঙ্গে উচ্ছেদের মামলা করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।