Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

52ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় ওই এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করেছে বিভিন্ন সংগঠন।

এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেনের অপসারণ চেয়েছে সংগঠনগুলি। শুক্রবার রাজধানীতে হিন্দুপ্রধান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট, জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীও বিক্ষোভে অংশ নেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল বলেন, ‘ঘটনা ঘটার কয়েক দিন পরে মন্ত্রী ছায়েদুল হক এলাকায় গেছেন। তিনি যাওয়ার পরেও সেখানে আবার হামলা হলো। এতেই বোঝা যায় তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’ এই ঘটনায় তিনি মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগ দাবি করলে উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সমস্বরে তার প্রতি সমর্থন জানান।
তাপস বলেন, নাসিরনগরের ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম ওইদিন সমাবেশের অনুমতি না দিলে এই হামলার ঘটনা ঘটত না। আমরা ইউএনওর অপসারণেরও দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং, সুভাষ সিংহ রায়, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের অশোক বড়ুয়া, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল রোজারিও, ঐক্য পরিষদের উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি রূপচাঁদ বিশ্বাস ও চিত্তরঞ্জন দাস, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায়, জে এল ভৌমিক, কিশোর রঞ্জন মন্ডল, জয়ন্ত্রী রায়, প্রিয়া সাহা, ব্রজ গোপাল দেবনাথ, বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল কুমার চ্যাটার্জী ও কাজল দেবনাথ।
ইসলাম অবমাননার অভিযোগে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ ওঠেছে।
নাসিরনগরের ইউএনও মোয়াজ্জেম ও ওসি আবদুল কাদেরের উপস্থিতিতে একটি সমাবেশে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যের পর ওই হামলা হয়। ওই ঘটনার পর সহস্রাধিক লোককে আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তিনটি তদন্ত কমিটি। মন্দিরসহ বাড়িঘরে হামলার পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই শুক্রবার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আবারো আগুন দেয়া হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদ ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে মিলিত হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ২০টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এসে বেলা ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন তারা।
গত ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উপাসনালয় ও শতাধিক ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং লুটপাট করে দুষ্কৃতকারীরা। পরে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে।