Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৬ :
শেরপুর জেলার ৫টি উপজেলার সিংহভাগ লোক কৃষি ফসলের উপর নির্ভরশীল। উক্ত ৫টি উপজেলার নিচু ও সমতল ভূমিগুলিতে ধান ও পাট চাষ করে থাকে। আর উঁচু জমিগুলিতে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করে থাকে। তাই দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা তাদের স্বল্প জমিতে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করে অনেক লাভজনক হচ্ছে। এছাড়াও এই সমস্ত উঁচু জমিতে পানি সংকটের কারণে ধান-পাট চাষ করা যায় না। নরসিংদী থেকে অত্রাঞ্চলে এসে বসতি করে দক্ষ সবজি চাষী।

এসমস্ত চাষীর অনুসরণ করে অত্রাঞ্চলের কৃষকরা এখন প্রায় ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তের উঁচু জমিগুলিতে লাউ, শিম, বরবটি, করলা, ঝিঙ্গে, কদু, কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, কাকরুল, দুধকশি, ঢেরস, পেঁপে ও গাজরসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে থাকে সীমান্তের কৃষকরা। একই পদ্ধতিতে শ্রীবরদী উপজেলার চরাঞ্চলের উঁচু উর্বর ভূমি গুলিতে বেগুন, মূলা, ফুলকপি, বাধাঁকপি, আলু, পাতাকপি, গাজর, মরিচ, সরিষা, মিষ্টি আলু, পেঁয়াচ, রসুন, মুগ ডাউল, মুশুর ডাউল ও মাশকালাইসহ বিভিন্ন জাতের কৃষি ফসল চাষাবাদ করে থাকে। অপরদিকে নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় আদা, হলুদ, মরিচ, বেগুন, শিম, পাতাকপি, ফুলকপি, বাধাঁকপি, লাউসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল চাষ করে থাকেন। উল্লেখ্য, এসমস্ত সবজি ও মসলা জাতীয় ফষল চাষ করে ধান ও পাটের চেয়ে অধিক লাভবান হচ্ছেন। তাই ধান ও পাটের চেয়ে এসমস্ত কৃষি ফসল চাষ করতে আগ্রহী কৃষকরা। কারণ তাদের চাহিদা অনুপাতে ফসলের মূল্য পাচ্ছেন।

এতে কৃষকরা অল্প জমি চাষ করে বেশী লাভবান হচ্ছে। প্রকাশ থাকে যে, প্রতি ০১ শতাংশ জমিতে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করে ১ থেকে ২ হাজার টাকার ফসল বিক্রি করতে পারে। কিন্তু ধান ও পাট চাষ করে সবজির মতো আয় করা সম্ভব হয় না। জানা যায়, এবছর নকলা উপজেলার বহু কৃষক হলুদ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। যে সমস্ত এলাকায় হলুদ চাষ করা হয়েছে বানেশ্বর্দী, উরফা, চন্দ্রকোনা, গণপদ্দী, চরঅষ্টধর ও পাঠাকাটা ইউনিয়নের অনেক চাষি হলুদ চাষ করে তাদের সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। অনুর্বর জমিতে কম পুঁজিতে ও কম পরিশ্রমে বেশী লাভ হওয়ায় উপজেলায় হলুদ চাষির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার হলুদ সরবরাহ করা হয় আশপাশের জেলাগুলোয়। তাছাড়া বাড়ির আঙিনা ও আশে পাশে বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের ব্যবহারের জন্য আরও বহু কৃষক প্রায় ১শ একর জমিতে হলুদ চাষ করেছেন কৃষকেরা। গণপদ্দী নাজিম উদ্দিন, চন্দ্রকোনার রইছ উদ্দিন, উরফার ফিরোজ মিয়া, চরকৈয়ার গুঞ্জুর, বকুল ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সীমান্তের গাড়কোনা, ফাকরাবাদ, গোমড়া, সন্ধ্যাকুড়া, বনগাঁও ও গান্ধিগাঁও গ্রামের বহু চাষী হলুদ, আদা, সবজি এবং মসলা জাতীয় ফসল চাষ করে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলহাজ্ব এ.কে.এম কোরবান আলী জানান, এসমস্ত পরিত্যক্ত উঁচু ভূমিগুলি পানি সংকটের কারণে ধান-পাট চাষ করা সম্ভব হতো না। এই উঁচু ভূমিগুলি পতিত পড়ে থাকতো। আমাদের পরামর্শে স্বল্প জমির দরিদ্র কৃষক ও প্রান্তিক চাষীরা ধান-পাটের পরিবর্তে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করে তারা এখন নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে সংসারের স্বাচ্ছন্দ ফিরিয়ে এনেছে।