খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৬: কোনো যুক্তিতেই বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিসরে সচেতন মানুষের কাছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বশেষ অবস্থা ও সরকারি অবস্থান জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সুলতানা কামাল বলেন, “সার্বিক বিচারে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই কয়লাভিত্তিক প্রকল্প। এটি কোনো যুক্তিতেই সারা বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিসরে কোনো জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন সচেতন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো দিনই তা গ্রহণযোগ্য হবে না।”
রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রচারিত সরকারি বিজ্ঞাপনকে ‘বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণামূলক’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, মিথ্যা তথ্যের ওপর এই বিজ্ঞাপন নির্মিত হয়েছে। এই বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি জানান তিনি।
সুন্দরবনকে বাংলাদেশের ‘প্রাকৃতিক বর্ম’ উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এই বন তার বুক পেতে দিয়ে আমাদের লাখ লাখ মানুষ, প্রাণ ও সম্পদকে রক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে। অথচ সেই সুন্দরবনকে সরকারি উদ্যোগে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার মতো আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “সুন্দরবন প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান আর জলবায়ু প্রশ্নে তার অবস্থান ও আকাক্সক্ষা পরস্পরবিরোধী। কারণ, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করতে হলে সুন্দরবনকে অক্ষত রাখা আমাদের প্রধান ও পরম দায়িত্ব।”
সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রামপাল নিয়ে ইউনেসকোর যে প্রতিবেদন, তা জাতিসংঘের মহাসচিব অনুমোদন করেছেন। তাদের প্রতিবেদন যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রর বিরুদ্ধে, সেটা প্রমাণিত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, সিপিবির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আবদুল মতিন।