Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

48খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৬:
কাতার থেকে কয়েক হাজার ‘অবৈধ’ কর্মীকে বাংলাদেশে ফিরতে হবে। কিছু দিন আগে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিদের তিন মাসের ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে কাতার কর্তৃপক্ষ। আর তারমধ্যেই সরকারের অনুমতি নিয়ে সেদেশ ছাড়ার সুযোগ থাকছে অবৈধদের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের খুব বেশি শ্রমিক অবৈধভাবে কাতারে অবস্থান করেন না। এই সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ হাজার হতে পারে। তাছাড়া বৈধভাবে বর্তমানে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক বৈধভাবে কাতারে যাচ্ছে। আর বৈধভাবেই সেদেশে অবস্থান করছেন তিন লাখেরও বেশি শ্রমিক। ফলে অবৈধরা ফিরে এলেও সেখানকার শ্রম বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। তবে সরকারের উচিত যদি কোনো সুযোগ থাকে তাদের সেখানে বৈধ করার তাহলে সেটা করতে হবে। কারণ তারা সেখানে আইন শৃঙ্খলা ও ভাষাসহ সবকিছুতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘‘তারা এখনো আমাদের অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি। জানালে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব। ‘’ কিছু শ্রমিক ফিরে এলেও শ্রম বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করেন তিনি।
সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কাতার সরকার অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা দিয়ে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেদেশ ত্যাগ করতে বলেছে। এ সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে অবস্থান করা বিদেশিরা কাতার ছেড়ে গেলে কোনো জরিমানা দেয়া লাগবে না, এবং তারা পুনরায় কাতারে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু সাধারণ ক্ষমার মেয়াদের মধ্যে দেশত্যাগ না করলে, তাদের বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানা শাস্তি হতে পারে। ”
তিনি বলেন, ‘‘এপর্যন্ত প্রায় দু’শ বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার আওতায় কাতার ত্যাগ করেছেন। আরও এক হাজার তিন শ’ জনকে আমরা ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করেছি, যাতে করে তারা নির্বিঘেœ কাতার ত্যাগ করতে পারেন। অন্য দেশগুলোর অবৈধ অবস্থানকারীরাও কাতার ত্যাগ করছে। ”
জানা গেছে, সাধারণ ক্ষমায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অবৈধদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। কাতার সরকারের পক্ষ থেকে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করা হলো। যেসব বিদেশি আইন অমাণ্য করে কাতারে অবস্থান করছেন, তারা কোনো ধরনের আইনি জটিলতা ছাড়া দেশত্যাগ করতে পারবেন। অবৈধ অভিবাসীরা কাতারের সিআইডি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে যাওয়ার ‘এক্সিট পারমিট’ নেয়ার সুযোগ পাবেন।
সৌদি আরব, লেবানন ও জর্ডানের শ্রমবাজার খুলে যাওয়ায় কাতারও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে। তাদের ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে বিপুলসংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন হচ্ছে। তাই অন্যান্য দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও তারা দুই থেকে আড়াই লাখ কর্মী নিতে পারে। চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি কাতার সফরকালে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল থানি ও প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ড. ঈসা সাদ আলজাফালি আল নুয়াইমির কাছ থেকে এই আশ্বাস পেয়েছেন।
এদিকে, অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্স ইউনিটের (রামরু) সমন্বয়কারী অধ্যাপক সি আর আবরার বলেছেন, ‘‘অল্প কিছু শ্রমিক ফিরে এলেও শ্রমবাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। তবে যারা ওখানে কাজ করে তারা ওখানকার আইন শৃঙ্খলা ও ভাষা সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছে। ফলে তাদের যদি বৈধ করার সুযোগ দেয়া যায় তাহলে খুব ভালো হয়। ”
তিনি বলেন, পাশাপাশি তারা কিভাবে অবৈধ হলো সেটাও খতিয়ে দেখবে হবে। যদি তারা বৈধভাবে সেখানে গিয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে অবৈধ হয় তাহলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে সরকারকে। এবং তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে। ‘’ -ডয়চে ভেলে