Thu. Jun 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৬:56
নবম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী গণধর্ষণ মামলায় এক নারীসহ ৫জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ জাহেদ মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার মোগলপাড়া গ্রামের আঃ রশিদের মেয়ে বিথী আক্তার ওরফে ইভা (২২), কালিহাতি থানার আউশনারা বোকরেবাইদ গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে এসএম নূরুজ্জামান ওরফে গেদা (৪৫), একই থানার কুটিবাড়ি গ্রামের মোঃ গাজীবুর রহমানের ছেলে মোঃ হারুন অর রশীদ ওরফে হারুন (৩১), একই থানার জটাবাড়ি পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ শাহজাহান আলী ওরফে শাহজাহান ও টাঙ্গাইলের মধুপুর থানার বোলালী মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত হাজী ওমেদ আলী সরকারের ছেলে মনিরুজ্জামান ওরফে মনি।
রায়ে আসামিদের ১লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি মোঃ ফজলুল কাদের জানান, ২০১২ সালের ৬ ডিসেম্বর আসামি বিথী আক্তার ইভা তার মামাত বোনের বিয়েতে ভিকটিম বান্ধবীকে নিয়ে যায়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে আসামি বিথী সহযোগী আসামি নুরুজ্জামান, হারুন অর রশিদ, শাহজাহান ও মনিরুজ্জামানের হাতে তুলে দেয়। এসএম নুরুজ্জামান গেদার বাড়িতে ভিকটিমকে আটকে রেখে ৪ দিন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণে সহায়তাকারী আসামি বিথী আক্তার ইভা অসুস্থ ভিকটিমকে তার বাড়ির কাছে রেখে পালিয়ে যায় এবং ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে ছুরি দিয়ে হত্যা করবে বলে তাকে ভয় দেখায়।
এতে ভিকটিম আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাটি লুকানোর চেষ্টা করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে ভিকটিম বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেয়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। ডাক্তারি পরীক্ষা ও ভিকটিমের স্বীকারোক্তিতে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মজিবুর রহমান সহায়তাকারী বিথীসহ চার ধর্ষকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পিপি আরও জানান মামলাটি টাঙ্গাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ছিল। পরে এ মামলায় বিচারক বিব্রতবোধ করায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর মামলাটি গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
মামলায় ১৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার আদালত আলোচিত মামলাটির রায় প্রদান করেন।
ভিকটিমের পক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তাবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারী মোঃ জালাল উদ্দিন ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের টঙ্গী শাখার সভাপতি আনোয়ারা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারী মোঃ জালাল উদ্দিন জানান গণধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীটিকে দেড় বছর ঢাকার শেলটার হোমে রাখা হয়। পরে তাকে তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দিলে সেখান থেকে কিছু দিন পরে তাকে ফের ঢাকায় আনা হয়। এর পর তাকে একটি এনজিও’র সহায়তায় ৬ মাসের গার্মেন্টস প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বর্তমানে সে গাজীপুরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করছে।