খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৬: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) লিফটের সামনে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল শুক্রবার সকাল থেকে অবশেষে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত দলের প্রধান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এ কমিটি সকাল নয়টার দিকে রামেক হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, হাসপাতালের রক্তসঞ্চালন বিভাগের প্রধান এবং ওই কমিটির সদস্য ডাক্তার মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি জানান, ৫ সদস্যের তদন্ত দল সকালে রামেক হাসপাতালের নতুন ভবনটি পরিদর্শন করেন। কেন রডের পরিবর্তে বাঁশ দেওয়া হলো, সে বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছেন। রামেক হাসপাতালের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হারুন অর রশিদ।
এছাড়াও সদস্য হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একজন করে দুজন প্রকৌশলী, স্বাস্থ্য পকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এম হাসান এবং রামেক হাসপাতালের রক্ত সঞ্চালন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার মোসাদ্দেক হোসেন। গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই কমিটি গঠন করে রামেক কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকালে তদন্ত দল রামেক হাসপাতালে লিফটের সামনে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত দলের প্রধান হারুন অর রশিদ শুক্রবার ভোরেই ট্রেনযোগে রাজশাহীতে এসে পৌঁছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর রাতে রামেক হাসপাতালের তৃতীয় তলার লিফটের সামনে টাইলসের নিচে বাঁশ দেখা যায়। পরবর্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরের দিন ১ নভেম্বর রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে। তবে ওই কমিটি মনোপুত: না হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ল থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্র মতে,২০০১২ সালে ১ হাজার শয্যার নতুন ভবনটি উদ্বোধনের পর চলতি বছরের জুন মাসে সেখানে লিফট বসানো হয়। তবে লিফট বসানোর পরে দরজার সামনে বড় একটি জায়গা ফাঁকা থাকে। সেই স্থানেই বাঁশের ফালা দিয়ে তার ওপর পত্রিকা বিছিয়ে সিমেন্ট ও বালু দিয়ে ঢালাই করা হয়। এরপর তার ওপর বসানো হয় টাইলস। এ কারণে ছয় মাস না যেতেই ওই টাইলস উঠে গিয়ে সেখানে বাঁশ দেখা যায়। এর পরই বিষয়টি নজরে আসে অনেকের। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর শুরু হয় তোলপাড়। ভবন নির্মাণের কাজটি করে ঢাকার মার্ক বিল্ডার্স লিমিটেড এবং লিপট বসানোর কাজ করে প্রোপার্টি লিফট প্রাণ আরএফএল গ্রুপ। দুটি কম্পানীর অনিয়মের কারণে পুরো ভবনটিই এখন কিছুটা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলেও দাবি করেন অনেকে। ভবনের অনেক স্থানে এরই মধ্যে টাইলস খসে খসে উঠতে শুরু করেছে। আবার দেখা দিয়েছে ফাটলও।