খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৬: বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকেই জামালপুর শহরের দশটি সড়কের বেহাল অবস্থা হয়েছে। সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে গিয়ে ইটের খোয়া বেরিয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে। সেইসব স্থানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের। ফলে সড়কগুলো দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। শহরবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
জামালপুর শহরের মালগুদাম রোড, লাঙ্গলজোড়া-গেইটপাড় রোড, ফুলবাড়িয়া-বাঘারহাটা রোড, পালপাড়া-চালাপাড়া রোড, মৃধাপাড়া-লম্বাগাছ রোড, বানিয়া বাজার-ডাকপাড়া রোড, মুকুন্দবাড়ী-ডাকপাড়া চৌরাস্তা রোড, ফুলতলা-বাইপাস রোড, মুকুন্দবাড়ি-বন্দেরবাড়ি রোড ও সিংহজানি হাইস্কুল রোডসহ ১০টি রোড মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মালগুদাম রোডের গেইটপাড় এলাকার ইজিবাইক স্ট্যান্ড মোড়ের অংশে ইটের খোয়া বের হয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে এবং রেল স্টেশন ফুটওভারপাস ব্রিজের সামনে বিশাল আকারের একটি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে হাটু সমান বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে ছোট-বড় বহু গর্ত। এতে চরম ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে ইজিবাইক, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। এ সময় ইজিবাইক চালক ফরহাদ মিয়া বলেন,‘প্রায় তিন-চার মাস ধরে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ইটের খোয়া বেরিয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরপর রাস্তার মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে ভোগান্তি আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সড়কের গর্তে পানি জমে থাকায় ইজিবাইক উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে।
দুই কিলোমিটার লম্বা লাঙ্গলজোড়া সড়কের প্রায় এক কিলোমিটারই ইটের খোয়া উঠে বহু গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচল অনুপযোগী পড়েছে। কার্পেটিং উঠে পুরো সড়কজোড়ে বহু ছোট-বড় গর্তে হাটু সমান বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী ইজিবাইক ও রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত সাত-আট মাস আগে থেকে পুরো সড়কের অর্ধেকর ইটের খোয়া উঠে পড়ে। বৃষ্টির কারণে গত তিন-চার মাস থেকে ছোট গর্তগুলো এখন বড় গর্তে পরিনত হয়েছে। সেসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায়ই বড় বড় গর্তের মধ্যে ইজিবাইক উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যানবাহনও চলাচল করতে চায় না। এতে করে লাঙ্গলজোড়া এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
লাঙ্গলজোড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার বলেন,‘বর্ষকাল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়লেও কর্তৃপক্ষ এখনও সংস্কারের কোনো উদ্যোগই নেয়নি। এতে প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করা কমপক্ষে এক হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বানিয়া বাজার-ডাকপাড়া সড়কের ৪০ থেকে ৫০টি স্থানে ভেঙ্গে ইটের খোয়া বেরিয়ে আছে। অনেকাংশে অসংখ্য বড় বড় গর্ত রয়েছে। ওই গর্তগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। পুরো সড়ক জোড়ে কাদা ও পানি জমে রয়েছে। ফুলবাড়িয়া-বাঘারহাটা সড়কের দুই পাশে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে
সড়কটিতে হাঁটু পানি জমে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা পথচারীদের হেঁটে চলার উপায় থাকে না। বৃষ্টির পানি জমে সড়কের বহু স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি বলেন,‘আমি নতুন মেয়র হিসাবে পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েছি। খোঁজ-খবর নিয়ে শুনেছি দীর্ঘদিন ধরে ওই দশটি সড়ক সংস্কার হয়নি। ফলে সড়কগুলোর অবস্থা অনেকটাই খারাপ হয়ে পড়েছে। ওইসব সড়ক নতুন করে সংস্কারের মতো বাজেট এই মুর্হুতে পৌরসভায় নেই। তবে অন্য কোনো প্রকল্প করে হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ওইসব সড়ক সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।