Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৬:  আইনী জটিলতার কারনে দীঘদিন ধরে শরীয়তপুরে পুলিশের জব্দ করা প্রায় দেড় শতাধিক মোটরযান খোলা আকাশের নীচে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বিপদে পড়েছেন যানবাহনের মালিক । পাশাপাশি পুলিশ না দিতে পারছে গাড়ি ফেরত ,না পারছেন নিলাম করতে । এসব যানবাহনের মধ্যে রয়েছে প্রাইভেট কার, ট্রাক, পিকাপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং মোটর সাইকেল। জব্দ করা এসব গাড়ির বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।

স্থানীয় সূত্র ও শরীয়তপুর পুলিশ সূত্র জানায়, জেলার ৬টি থানা, কোর্ট এবং পুলিশ লাইনে ১শত ৫০টি আটককৃত গাড়ি রয়েছে। এরমধ্যে শরীয়তপুর সদর থানায় ৪১টি, গোসাইরহাট থানায় ৭টি, জাজিরা থানায় ১১টি, ভেদরগঞ্জ থানায় ৫টি, নড়িয়া থানায় ২টি, ডামুড্যা থানায় ১টি, শরীয়তপুর কোর্টে ৩৫টি এবং পুলিশ লাইনে ৪৮টি গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ির বেশীর ভাগই মোটর সাইকেল। অন্যান্য গাড়ির মধ্যে প্রাইভেট কার, পিকাপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং ট্রাক ও রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে এ সব গাড়ি গুলো আটক করেছেন। আইনী জটিলতার কারনে দীঘদিন ধরে শরীয়তপুরে পুলিশের জব্দ করা প্রায় দেড় শতাধিক মোটরযান খোলা আকাশের নীচে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জব্দ করা এসব গাড়ি মামলার আলামত হিসেবে থানার সামনে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে মরিচা ধরায় বেশীর ভাগ যানবাহনই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন।

অন্যদিকে দিন দিন জব্দ হওয়া যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তা রাখার জন্য জায়গার সংকুলান হচ্ছেনা। পাশাপাশি মামলার আলামত হিসেবে যানবাহন গুলো সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় কোর্ট পুলিশ এবং থানা পুলিশকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। জেলা সদর সহ ৬টি থানা চত্বরে দিন দিন আটক করা গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে কাগজে কলমে গাড়ির সংখ্যার সাথে বাস্তবে মিল নেই। কিছুদিন পার হলেই আস্তে আস্তে গাড়ির সংখ্যা কমে যায়। সরকারী এক শীর্ষ কর্মকর্তার ভাই কয়েকদিন পূর্বে কিছু মোটর সাইকেল নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সেটা নিলামে নিয়েছে নাকি নিলাম ছাড়াই দিয়েছেন ? এটা এখনো জানা যায়নি।

জব্দ করা একাধিক গাড়ির মালিকের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, পুলিশের দায়ের করা মামলায় নিজেদের জামিন হলেও শুধু মাত্র আইনী জটিলতার কারণে গাড়িটি মুক্ত করতে পারছেন না। তারা আশংকা করছেন, আর কিছুদিন এভাবে থাকার পর আইনী জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও হয়তো মোটর সাইকেল নয়, লোহা লক্কর ফেরত নিতে হবে।

ভোজেশ্বর বাজারের বাসিন্দা ইয়াকুব পেদা বলেন, সঠিক কাগজ পত্র না থাকায় তিনিসহ অনেকেই গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। আবার অনেকে বৈধ কাগজ পত্র থাকা সত্বেও আইনী জটিলতা এবং হয়রানির কারণে গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

এদিকে জব্দকৃত গাড়ি গুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে তা সহজ উপায়ে ছাড়পত্র প্রদানের দাবী জানিয়েছে সুশীল সমাজ। এতে কোটি টাকার রাজস্ব আসবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এ ধারণা করছেন তারা।

শরীয়তপুরের ট্রাফিক সার্জেন্ট মোঃ শামীম হোসেন জানান, জব্দ হওয়া যে সব যানবাহন রয়েছে, তার বেশীর ভাগই নাম্বার বিহীন, চুরি এবং ছিনতাই করা। এদের কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় জব্দ করা হয়েছে। যা থানায় মামলার আলামত হিসেবে রাখা হয়েছে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, আইনী জটিলতার কারনে আটককৃত যানবাহন নিয়ে আমরা বিপাকে আছি। না পারছি গাড়ি ফেরত দিতে,না পরছি নিলাম দিতে। এ সব যানবাহন পড়ে থাকার কারনে দিন দিন বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন,জব্দ করা যানবাহনের সুষ্ঠু সংরক্ষণ এবং তা নষ্ট হওয়ার আগে নিলামে বিক্রী করে সে অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়া উচিত।