Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

24kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০১৬:  মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের এক হাজারেরও বেশি বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আগুন দেয়ার খবর নাকচ করে দিলে সোমবার ওয়াশিংটন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে এ দাবি জানায়।
গত ৯ অক্টোবর রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের উপর অজ্ঞাত পরিচয়ধারীরা হামলা করে।
এরপর থেকে ওই এলাকাটি ঘিরে ফেলে রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে অভিযান চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশ।
অভিযানকালে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এর অর্ধেকই ঘটেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দুদিন ধরে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবষর্ণ করলে কয়েক ডজন রোহিঙ্গা নিহত হওয়ার ঘটনার সময়।
মিয়ানমারের সরকারি সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গত ছয় সপ্তাহ ধরে চলা অভিযানে অন্তত ৭০ জন রোহিঙ্গা নিহত এবং চারশ’ জন গ্রেফতার হয়েছে।
তবে রোহিঙ্গা অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টদের দাবী, আরও অনেক বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, যা এরই মধ্যে সাড়ে তিনশ’ ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের মুখে শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে।
রাখাইনের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযান চালাচ্ছে সেখানে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের যেতে দেয়া হচ্ছে না।
এরপরেও সেখানকার ব্যাপক সংখ্যক ঘরবাড়িতে আগুন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা এবং নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণের খবর বেরিয়ে এসেছে।
বিশেষ করে স্যাটেলাইটের চিত্রে ঘরবাড়িতে আগুন দেয়ার ব্যাপকতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
এইচআরডব্লিউ সোমবার বলেছে, তারা স্যাটলাইট চিত্র ব্যবহার করে গত ১০-১৮ নভেম্বর পাঁচটি রোহিঙ্গা গ্রামে ধংস করা ৮২০টি স্থাপনা চিহ্নিত করেছে।
সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গাদের গ্রাম অবরোধ করে চালানো সেনা অভিযানকালে সর্বমোট এক হাজার ২৫০টি ভবন গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করায় নোবেলজয়ী অং সান সুচির সরকারের সমালোচনা করেছেন এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের আগের স্বৈর শাসনামলের মতো দোষারোপ এবং অস্বীকার করার পরিবর্তে বর্তমান সরকারের উচিত ঘটনা প্রবাহের দিকে চোখ রাখা।
এদিকে মিয়ানমার সরকার বলছে, ‘জঙ্গিদের’ হামলায় তিনশ’রও কম সংখ্যক বাড়ি ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে। তারা সরকারি বাহিনী এবং জনগণের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করতে এমনটি ঘটিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।