খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০১৬: ভারতে ৫শ ও ১ হাজার রুপির নোট বাতিল হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও। বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, এমনকি ভুটানেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহার হয়। এসব দেশে অনেক ভারতীয় মুদ্রা রয়েছে এবং সেখানে সরবরাহ করা হয়েছে। এখন নোট বাতিলের ফলে এ দেশগুলোতেও প্রভাব পড়েছে। ভারতের দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতে সর্বোচ্চ মানের মুদ্রাগুলো বাতিল ঘোষণা করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে এসব দেশের প্রতিটিতে।
এসব দেশের ব্যাংক ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ভারতীয় মুদ্রা থাকলেও এক্ষেত্রে তাদের সমস্যায় পড়া উচিত নয়। কিন্তু সমস্যাটা টের পাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পর্যটক পর্যন্ত। ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, নেপালের কথাই ধরুন। এ দেশটিকে পাকিস্তানে ছাপানো ভারতীয় নকল মুদ্রার ট্রানজিট রুট হিসেবে ধরা হয়। এ দেশটির সঙ্গে ১৭শ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা মারাত্মক স্পর্শকাতর ও নিয়ন্ত্রণহীন। নেপালে বসবাস করেন এমন মানুষ এবং কর্মজীবী মানুষের কাছে রয়েছে ভারতীয় মুদ্রা। ভারতে কাজ করেন হাজার হাজার নেপালি। তারা ভারতে নিয়ে আসেন অথবা ভারত থেকে উপার্জন করে তাদের দেশে নিয়ে যান ভারতীয় রুপি। নেপালের রাষ্ট্র ব্যাংক বলেছে, তাদের সরকারি আর্থিক ব্যবস্থায় রয়েছে ৩ কোটি ৩৬ লাখ রুপির ভারতীয় নিষিদ্ধ মুদ্রা।
কিন্তু বাস্তবে এর চেয়ে অনেক বেশি রুপি রয়েছে নেপালিদের কাছে। কারণ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন নেপালি নিজের কাছে ২৫ হাজার রুপি রাখতে পারেন। ভুটানে বৈধভাবে ব্যবহার করা হয় ভারতীয় রুপি। তারাও ভারতের সঙ্গে দ্রুততায় পদক্ষেপ নিয়েছে। রয়েল মনিটারি অথরিটি অব ভুটানের সঙ্গে সরকার ভুটানিদের নিষিদ্ধ রুপি পাল্টে নিতে প্রথমে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। পরে সেই সময়সীমা পরিবর্তন করা হয়। সংশোধিত সময় হচ্ছে ৩০শে নভেম্বর। এ সময়ের মধ্যে তাদেরকে ভারতীয় রুপি ব্যাংকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এরপর ব্যাংকগুলো তাদের সেই রুপি ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকে জমা দিয়ে নতুন নোট নিয়ে দেবে গ্রাহকদের। রয়েল মনিটারি অথরিটি অব ভুটানের গভর্নরের মতে, সে দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে একশ’ কোটি রুপি এরই মধ্যে জমা হয়ে থাকতে পারে। ভারতের সঙ্গে ছোট ছোট ব্যবসা রয়েছে শ্রীলঙ্কানদের। সেখানেও ভারতীয় কিছু রুপির মালিক ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করা হয়। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক এসব প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংকট সমাধানে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। কিন্তু এই মর্মদাহ কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগবে।
ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, পাকিস্তানে সরকারি ছাপাখানাগুলোয় ভারতীয় ভুয়া মুদ্রা ছাপা হয়। এরমধ্য দিয়ে ভারতের অর্থনীতিকে খর্ব করার চেষ্টা করা হয়। আর ওই অর্থ তুলে দেয়া হয় সন্ত্রাসীদের হাতে। মানবজমিন