Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০১৬:80
জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) প্রধান কারাবন্দী মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানীকে ছিনিয়ে নিতে কাশিমপুর কারাগারে হামলার পরিকল্পনা করেছিল সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাবের কাছে গ্রেফতার হওয়া দুই এবিটি সদস্য। শুধু তাই নয় আরো কয়েকজন আলোচিত ব্লগারকে হত্যার পরিকল্পনাও করেছিল তারা।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরে বেশ কিছু উগ্রবাদী বই, লিফলেট, চাপাতি ও ছুরিসহ দুই এবিটি সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১১। তারা হলেন- আব্বাস আলী ও সাব্বির হোসেন রাজু। পরে দুপুরে র‌্যাব-১১ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়ে কথা বলেন র‌্যাবের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল কামরুল হাসান।
র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আব্বাস আলীর বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া এলাকায়। সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক। ২০১২ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে ময়মনসিংহের নিজ গ্রাম ছনকান্দায় একটি ঘরোয়া মাহফিলে জসিম উদ্দিন রহমানির বয়ান শোনার পর আব্বাস তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। পরে গাজীপুরে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করতে গিয়ে ফিরোজ ও সেলিম নামে দুই ব্যক্তির মাধ্যমে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় জসিম উদ্দিন রাহমানির সঙ্গে আব্বাসের একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়। এক সময় সে সংগঠনের ঢাকা বিভাগের সমন্বয়কের দায়িত্ব পায়। এছাড়া তার কয়েকজন অনুসারীকে স্লিপার সেলের সঙ্গে সংযুক্ত করে। আব্বাস ফেসবুকে ছয় থেকে আট জনের গ্রুপ তৈরি করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো। এছাড়া যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ‘টোটানোটা’ ইমেইল ব্যবহার করতো।
গ্রেফতারকৃত আরেক এবিটি সদস্য সাব্বিরের বাড়ি রংপুর জেলার কাউনিয়া এলাকায়। সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের এডমিন ছিল। এছাড়া জিহাদি বই সংগ্রহ করে তা অন্যদের পাঠ করিয়ে জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্বও পালন করতো সাব্বির। আইটি বিষয়ে সাব্বিরের ভাল জ্ঞান থাকায় আব্বাস তাকে প্রাধান্য দিত।
র‌্যাবের গোয়েন্দারা আরো জানান, তারা বিভিন্ন এলাকায় বিভক্ত হয়ে কাজ করতো। নিরাপত্তার জন্য এক গ্রুপের সদস্যরা অন্য গ্রুপের সদস্যদের চিনতো না। শুধু গ্রুপ প্রধানরাই অন্য গ্রুপের প্রধানদের চিনতো। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা আরো কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে পরিচিত হয় যারা আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের সহযোগী হিসেবে আরো আট জনের নাম প্রকাশ করে। তারা হলেন-রাশেদুল ইসলাম, কামাল, শহীদ, হুজাইফা, আব্দুল আজিজ, রাফিন, আব্দুল হাই ও আদনান।
গ্রেফতারকৃতরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আল কায়দার ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করতো। তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল কাশিমপুর কারাগারে হামলা করে তাদের নেতা জসিমউদ্দিন রাহমানীকে মুক্ত করা। সেজন্য তারা কাশিমপুর এলাকার কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করেছিল এবং কারাগারে হামলার অপেক্ষায় ছিল।
বিকল্প হিসেবে তারা রাস্তায় হামলা করে রাহমানীকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাও করেছিল। সেই সঙ্গে টার্গেট কিলিংয়ের জন্য আলোচিত ব্লগার ও তাদের ভাষায় কথিত নাস্তিকদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এসব কাজগুলো সম্পন্ন করতে অন্য জঙ্গি গ্রুপের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করে একত্রিত হওয়ার প্রচেষ্টা চালায় তারা। আর এ ব্যাপারে তারা নিয়মিত বৈঠক করে সাংগঠনিক পরামর্শ করতো