খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৬: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য পাঁচ কোটি টাকা বাজেট ধরেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যা গতবারের নির্বাচনী বাজেটের চেয়ে প্রায় তিন গুণ। ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবর নাসিক নির্বাচনে বাজেট ছিল দেড় কোটি টাকার কিছু বেশি।
ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব (বাজেট) মো. এনামুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য কমিশনের সম্ভাব্য বাজেট ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। তবে এটি কম-বেশি হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন পরিচালনা খাতে এ টাকা ব্যয় করা হবে। নির্বাচন পরিচালনার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের ভাতা, নির্বাচনী মালামাল কেন্দ্রে পৌঁছানো, ভোটকেন্দ্র মেরামতসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হবে এই টাকা।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০১১ সালের এ সিটি নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল পৌনে দুই কোটি টাকা। এরমধ্যে পরিচালনা খাতে ব্যয় হয়েছিল ৮১ লাখ টাকা এবং আইনশৃঙ্খলা খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯৩ লাখ টাকা। সব খাতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বাজেট বেড়েছে। দশম জাতীয় নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের সম্মানী ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ৭শ থেকে ২ হাজার এবং পোলিং অফিসারদের ৬শ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেন্দ্রে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পেছনে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রের মনিহারি দ্রব্য ক্রয়, মালামাল পরিবহন, ভোটকেন্দ্রে মালামাল প্রেরণ ও ফেরত আনাসহ পরিচালনা খাতে অর্থ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা খাতে অর্থ বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে গতবারের চেয়ে এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশে প্রথম দলীয় প্রতীকে হতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটিতে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সহকারী সচিব মো. রাজীব আহসান বলেন, ‘নাসিক নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না- এখনো পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্তই আছে। এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
বুধবার পর্যন্ত এ সিটিতে মেয়র পদে নয়জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪০ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৮ জন মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মেয়র পদে একজন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১১ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫০ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চার লাখ ৭৯ হাজারের বেশি ভোটার থাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ১৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন। এর সঙ্গে আরো ৭৫ হাজার টাকা ব্যক্তিগত ব্যয়ের সুযোগ রয়েছে। কাউন্সিলর পদে ভোটার অনুপাতে এক লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থীরা। বিধি লঙ্ঘনে দলকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানারও বিধান রাখা হয়েছে।
একজন মেয়রের সঙ্গে ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। মোট ভোটার চার লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন। এবার ভোটার বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৬৩টি এবং ভোটকক্ষ এক হাজার ২১৭টি।
নির্বাচনে ১৬৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার, এক হাজার ২১৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং দুই হাজার ৪৩৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সমর্থন না পেয়েও জয়ী হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। পদে থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করার বিধান না থাকায় বুধবার পদত্যাগ করেছেন আইভী।
এ সিটিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার, বাছাই ২৬ ও ২৭ নভেম্বর আর প্রত্যাহারের শেষ দিন ৪ ডিসেম্বর। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে।