Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৬: 43
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করতে শুরু করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের হাতে থাকা ১৩০ থেকে ১৪০টি পরমাণু বোমাকে কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে মোতায়েন করা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি মার্কিন রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের যে সব সামরিক ঘাঁটিতে পরমাণু অস্ত্র এবং তা প্রয়োগের পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে বা হচ্ছে, সেগুলোর অবস্থান এবং নকশাও তুলে ধরেছে মার্কিন বিশেষজ্ঞ দল।
বাণিজ্যিক উপগ্রহ চিত্র কাজে লাগিয়ে এবং সামরিক ঘাঁটিগুলোর অন্য কিছু বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পাকিস্তান অন্তত ৮-১০টি সামরিক ঘাঁটিতে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করেছে। এই ঘাঁটিগুলোর অধিকাংশতেই পরমাণু অস্ত্র নিক্ষেপের পরিকাঠামোও তৈরি হয়ে গেছে বলে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের দাবি। বাকিগুলোতে সেই পরিকাঠামো দ্রুত গড়ে তোলা হচ্ছে।
সিন্ধ প্রদেশের আকরো, পানো আকিল এবং মসরুর ঘাঁটিতে পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করেছে এবং তা নিক্ষেপের পরিকাঠামোও তৈরি করে ফেলেছে বলে রিপোর্টটিতে জানানো হয়েছে।
এছাড়া বালুচিস্তানের খুজদার, পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশের সরগোঢা সামরিক ঘাঁটিতেও পরমাণু অস্ত্র এবং তার প্রয়োগ পরিকাঠামো তৈরি। ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া আর এক পাঞ্জাবি শহর ভাওয়ালপুর এবং আফগান সীমান্তের কাছাকাছি ডেরা গাজি খাঁ-তে পাকিস্তানের যে দু’টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেখানেও পরমাণু অস্ত্র পৌঁছে গিয়েছে বলে মার্কিন রিপোর্টে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
তবে এই দুই সামরিক ঘাঁটিতে পরমাণু অস্ত্র নিক্ষেপের পরিকাঠামো সম্ভবত পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। তা দ্রুত তৈরি করা হচ্ছে।
পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের পরিকাঠামো চিহ্নিত করে অস্ত্রাগারের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানিরা। উপগ্রহ চিত্রে এই পাক সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ পরিকাঠামোর হদিস মিলেছে।
পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সম্বলিত গাড়ি রাখা হয়েছে পাকিস্তানের এই সব সামরিক ঘাঁটিতে। ১০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র থেকে ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র (ভারতের অধিকাংশ এলাকাই যার পাল্লার মধ্যে) দু’রকমই রয়েছে সেখানে। পরমাণু পরিকাঠামো সংক্রান্ত যে সব সরঞ্জাম পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে আমদানি করেছে, সে সবের অস্তিত্বও এই সামরিক ঘাঁটিগুলোতে চিহ্নিত করা গিয়েছে।
পরমাণু হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তান মূলত ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতা পাকিস্তানের সেভাবে ছিল না। কিন্তু আমেরিকার কাছ থেকে নেয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমানগুলোকে গোপনে পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের উপযুক্ত করে তুলেছে বলে মার্কিন রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
রিপোর্টটিতে করাচির পশ্চিমে অবস্থিত মসরুর বিমানঘাঁটির কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাক বিমানবাহিনীর যে অংশকে পরমাণু হামলার উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, সেই যুদ্ধবিমানগুলিকে মসরুর বিমানঘাঁটিতে রাখা হয়েছে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মোড়া মসরুর বিমানঘাঁটিতে সম্ভবত একটি ভূগর্ভস্থ অস্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে। একটি ভূগর্ভস্থ কম্যান্ড সেন্টারও সেখানে রয়েছে বলে রিপোর্টটি ইঙ্গিত করছে।
মার্কিন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পাকিস্তান এখনও প্রচুর পরমাণু অস্ত্র তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, তেমন নয়। কিন্তু যতগুলো পরমাণু অস্ত্র তাদের কাছে রয়েছে, প্রয়োজনে সেগুলোর সবক’টিকে প্রয়োগ করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো পাকিস্তান তৈরি রাখতে চাইছে।