খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৬: বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসনের নানা কার্যক্রম চালু থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে নির্দিষ্ট বয়সের আগে অনেকের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। দরিদ্রতা, সচেতনতার অভাব, মা বাবার বিচ্ছেদ, কুসংস্কার, প্রেমঘটিত কারণেই ১৮ বছর বয়সের আগেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে বেসরকারি সংস্থা গুড নেইবারস্ বাংলাদেশ পীরগঞ্জ সিডিপি’র জরিপে উঠে এসেছে। সংস্থাটি জানায়, পীরগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩টি বাল্যবিয়ে হয়েছে।
এছাড়াও সংস্থাটি প্রশাসনের সহায়তায় চারটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছে। সম্প্রতি জাল জন্মনিবন্ধন বানিয়ে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বিয়ে আয়োজন করলে পীরগঞ্জ শিশু পরিষদ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়। জাল জন্ম সনদের বিষয়ে সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, “সচিবের ভুলের কারণেই এটি হয়েছিল। এখন থেকে আমি সোচ্চার আছি।” পীরগঞ্জ উপজেলার মছলন্দপুর গ্রামে ১৬ বছরের এক কিশোরীর বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হওয়ার খবর পেয়ে প্রশাসন বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন। কিন্তু পরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঐ মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বলেন, “পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পরেও মেয়েটির পরিবার রাতের আঁধারে বিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখানে কী করার আছে।” বাল্যবিয়ে বিষয়ে গুড নেইবারস বাংলাদেশ পীরগঞ্জ সিডিপির ম্যানেজার জোসেফ টুটুল বিশ্বাস বলেন, “প্রশাসন ঠিকমতো তদারকি না করা এবং জন্ম সনদ জালিয়াতির কারণেই বাল্যবিয়েগুলো বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।” প্রশাসন সোচ্চার হলেই বাল্যবিয়ের হার কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
পীরগঞ্জ শিশু পরিষদের সভাপতি শিমু আকতার বলেন, “বাল্যবিয়ের খবর পেলেই আমরা ছুটে যাই। এরপর প্রশাসনের মাধ্যমে বিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করি। “অনেক সময় কিন্তু আমাদের চোখের আড়ালে অনেকের বিয়ে হয়ে যায়।”এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “বাল্যবিয়ের খবর পেলেই আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। “কিন্তু অভিভাবকরা সচেতন না হলে পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।”