Sun. Mar 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

unnamedখোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৬: আজ জাতির স্বাধীন সার্বভৌম অস্তিত্ব হুমকির মুখে, দেশপ্রেমিক নেতা কর্মীরা হতাশাগ্রস্থ। ৫ই জানুয়ারীর এক দলীয় প্রার্থী ও ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং নির্বাচন না মানার প্রবণতা, তিন মাস ব্যাপী জনগণের সমর্থনবিহীন আন্দোলন গুম, খুন, লুণ্ঠনসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয়ের মধ্য দিয়ে দেশকে এক অন্ধকার গহ্বরের দিকে ধাবিত করে বিদেশিদের জোয়ালে বেঁধে দেয়ার চক্রান্ত চলমান। দেশের এরূপ চরম দুঃসময়ে ভাসানীপন্থিরা আর নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে না। মনে রাখতে হবে এক জন দেশপ্রেমিকও স্বৈরশাসক হয়, যদি দেশে দেশপ্রেমিক বিরোধী দল না থাকে।

মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভাসানী ফ্রন্ট আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত আহ্বান জানান। ভাসানী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান জননেতা মমতাজ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ রবিবার বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জননেতা রাশেদ খান মেনন এম.পি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়–য়া। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)’র চেয়ারম্যান জননেতা আলমগীর মজুমদার।

প্রধান অতিথির ভাষণে রাশেদ খান মেনন এম.পি বলেন, মওলানা ভাসানীর আদর্শ বাস্তবায়নের ভিত্তিতে দেশকে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, মওলানা ভাসানীকে যারা ‘প্রফেট অব্ ভায়োল্যান্স’ বলে আখ্যায়িত করেন তারা আসলে এক পেশে মূল্যায়ন করেন। মূলতঃ মওলানা ভাসানী সা¤্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সারা জীবনভর শ্রমিক-কৃষক-মজলুম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে গেছেন। আজকে প্রয়োজন হচ্ছে মওলানা ভাসানীর রেখে যাওয়া আদর্শের আলোকে ব্যাপকতর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা।

সম্মানিত আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এম.এ রশীদ প্রধান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল’র চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চৌধুরী, এনডিপি’র মহাসচিব আলীনূর রহমান খান সাজু, স্বাধীনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ.এ.এম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এ,আর,এম জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ন্যাশনাল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী সাব্বীর, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ জিয়া, ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব ফিরোজ মোঃ লিটন, আমজনতা পার্টির মহাসচিব রফিকুল ইসলাম খান, গণতান্ত্রিক ঐক্য’র আহবায়ক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সভা পরিচালনা করেন ভাসানী ফ্রন্টের মহাসচিব এড. মিজানুর রহমান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের সম্পদ, বাড়ীঘর লুণ্ঠন, গাইবান্ধায় সাঁওতালদের ভূমি হতে উৎখাত সহ বিভিন্ন সময়ে দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের তক্মা এঁটে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ ধরার যে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলতে তাতে আমদেরকেই দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আহবান জানাতে হয়, “হে স্বদেশবাসী ভাইয়েরা- উঠো, জাগো। আমাদের সার্বভৌম অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে দেশপ্রেমিক, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে সম্মিলিত বিরোধীদল গঠন করি এবং এই একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেই।” তাহলেই মজলুম জননেতার আদর্শের বাংলাদেশ গড়তে আমরা সমর্থ হবো।

সভায় নেতৃবৃন্দ মিয়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ, অমানবিক ও নৃশংস নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মুসলিম বিশ^ সহ সকল মানবতাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জোর দাবি জানান।