Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

21kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৬: ইলেকশন হইলে যারা এমপি, চেয়ারম্যানে দাঁড়ায় (নির্বাচনী প্রার্থী হন) অামরার সামনে বক্তব্য দেন, ক্ষমতায় গেলে এলাকার সব সমস্যা সমাধান করার। ইলেকশনে পাস কইরা পরে আমরার আর কোন খোঁজ খবর নেয় না। সবাই কয় নির্বাচিত হইয়া জামালগঞ্জ-সাচনাবাজার সুরমা নদীর উপরে সেতু দিয়া দিব। কিন্তুু কত এমপি, মন্ত্রী আইল-গেল কেউই কথা দিয়া কথা রাখেনা। আওয়ামী লীগ সরকারের গত আমলে সাচনাবাজার হাই স্কুলে ভুমি প্রতি মন্ত্রী আইছিল, তাইনে কইয়া গেছিল সুরমা নদীর উফরে ব্রিজ দিয়া দিবো। সাথে আমরার এমপি সাবও আছিল, কই কোন কাম কাজ তো দেখতাছিনা। মনে হয় আমরার সাথে ঢং করে। আইয়া কইয়া যায় পড়ে আর ভুলেও মন অয় না।

এমন আক্ষেপ নিয়ে কথা গুলো বল্লেন জামালগঞ্জের ৫৫ উর্দ্ব বয়সের শ্রমজীবি আলী আমজদ মিয়া। সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ ও সাচনাবাজার এর সুরমা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণে এলাকাবাসীর দাবী উপেক্ষিত হয়ে আসছে স্বাধীনতার পর থেকে। উপজেলার জামালগঞ্জ, সাচনাবাজার, ফেনারবাঁক, বেহেলী ও ভীমখালী এই ৫ ইউনিয়নের প্রায় ২শতাধিক গ্রামের প্রায় ২ লাখ লোকের প্রধান হাট-বাজার সাচনাবাজার। সুরমা নদী পারা-পারে নিত্যদিনের সমস্যা যেন তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরমা নদীর ওপর এই সেতু নির্মানের ৪০ বছরের দবী উপেক্ষিত হওয়ায় উপজেলাবাসী বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা সহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার থেকে।

সরেজমিন খেয়া ঘাটে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে হাজার-হাজার মানুষের চলাচলে পথ এই সুরমা নদী পাড় হয়ে সাচনাবাজারে পূজোর বাজার করতে যাওয়া চন্দ্রীমা রানী দাস, রোমা রানী সরকার বলেন, একটি ব্রিজ এর কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়া ছোট ছেলে মেয়ে কে নিয়ে নৌকা পাড়াপাড়ে সাচনাবাজার পূজোর কেনাকাটা করতে যাচ্ছি। এতো মানুষের ভীর, যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। তবোও প্রয়োজনের কারণে যেতে হয়। নদীর উপর ব্রিজ হলে আমাদের এমন সমস্যায় পড়তে হতনা। রোগী নিয়ে আসা রফিকুল ইসলাম বড় আক্ষেপ করে বলেন, রোগী নিয়ে সাচনা পাড়ে বসে আছি, ওপাড় থেকে খেয়া নৌকা না আসা পর্যন্ত উপজেলা সদর হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এমন অবস্থায় অনেক রোগী বা গর্ভবতি মহিলারা মুমূর্ষ হয়ে পড়েন। এ ছাড়া রাতের বেলায় কি পরিমান দুর্গতি হয় নিজ চোখে দেখে যান। সুরমা নদীর উপর যদি একটি ব্রিজ হতো তা হলে আমাদের সারা জীবনের অক্ষেপ-কষ্ট শেষ হয়ে যেত। ‘শুধু তাই নয়, ওই নদী পারাপারের সমস্যায় প্রসবকালীন মা-শিশুসহ অনেক মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন বলে অনেকই জানান। তা ছাড়া উপজেলা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ জামালগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শতশত ছাত্র-ছাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড়াপাড়ের সময় না বলা নানান নমস্যায় সম্মুখিন হয় বলে জানিয়েছে তারা। কলেজ ছাত্রী শামীমা সুলতানা, রাহিমা বেগম, জান্নাতুননেছা বলেন, আমরাতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলেজে যাই। খেয়ার এমন অবস্থা হয় মনে হয় এই বুঝি ডুবলো।

এ ব্যাপারে, জামালগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: আব্দুস সাত্তার বলেন, সুরমা নদীর উপওে ব্রীজ নির্মানের বিষয়ে বুয়েটের সমীক্ষা টিম দ্বারা সমীক্ষা রিপোট শেষ। সাচনা-জামালগঞ্জ ব্রীজ ও মন্নান ঘাটে ব্রীজ দুইটির কাজ অবশ্যই এই সরকারের আমলে শুরু হবে। ইতোমধ্যে ব্রীজ নির্মানে সকল মেজারম্যান্ট সম্পন্নের পথে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, এলাকার মানুষের দাবী সম্পূর্ণ যৌক্তিক, আমিও তাদের সাথে এ ব্যাপারে একমত। এটি বিবেচনা করে জামালগঞ্জ-সাচনাবাজার সেতু নির্মানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। একটি টিম কয়েক বার স্থান পরিদর্শন করেন গেছেন। মেজারমেন্ট এর কাজ শেষ। আশা করি আমার নির্বাচনী এলাকা হাওাঞ্চল’র বাসীর প্রতি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সুনজর দেবেন। বর্তমান সরকারের আমালেই জামালগঞ্জ-সাচনাবাজার ও মন্নান ঘাটে সেতু নির্মান কাজ শুরু হবে।