খোলা বাজার২৪, শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা করতে জঙ্গিনেতা তামিম চৌধুরী যে আইএসের অনুমোদন চেয়েছিলেন, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে কোন তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “সম্প্রতি বিদেশি একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে গুলশান হামলায় আইএসের অনুমোদনের বিষয়টি বলা হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দাদের কাছে এমন কোন তথ্য নেই। তবু আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “নব্য জেএমবি নেতা মারজান, বাশার, রাজীবসহ যারা পলাতক আছে, তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।”
জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় পুলিশের সক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার বলেন, “হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে পুলিশের সক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ এখন যে কোনো ধরণের হামলার মোকাবেলা করতে সক্ষম।”
তিনি আরো বলেন, “দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এজন্য আমরা পুলিশকে জনবান্ধব ও নারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। নিরাপত্তা বাড়লেই দেশের বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগ যাতে বাধাগ্রস্থ না হয় সেজন্য পুলিশ কাজ করছে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার পরিকল্পনা করে তাতে আইএসের অনুমোদন চেয়েছিলেন মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। আইএস অনুমোদন দেয়ার পরই ভয়াবহ ওই হামলার সিদ্ধান্ত নেন জঙ্গিনেতা তামিম।
বাংলাদেশ পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আবু তারেক মোহাম্মদ তাজুদ্দিন কাওসার নামের এক আইএস নেতার সাথে তামিম চৌধুরীর যোগাযোগ ছিল। তিনিই তামিমকে বিদেশিদের টার্গেট করার তাগিদ দেন। যখন তারেকের সঙ্গে তামিমের যোগাযোগ হতো, সেসময় গুলশান হামলা নিয়ে একটি খসরা প্রবন্ধও তাদের আলোচ্যসূচিতে ছিল। যা পরবর্তীতে আইএস’র কথিত ম্যাগাজিন দাবিক-এ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশান হামলায় আইএসের অনুমোদন পাওয়ার পর তামিম চৌধুরী হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ পর্যবেক্ষণে ইসলামিক স্টেটসের বিশেষজ্ঞ পাঠানোর প্রস্তাব দেন।
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই রাত নয়টায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে গুলশানের স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিজান আক্রান্ত হয়। হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক নিহত হন। প্রায় ১২ ঘন্টার ‘জিম্মি সংকট’ শেষ হয় সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ দিয়ে। ওই কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি নিহত হন।
ওই ঘটনার পর তদন্তে উঠে আসে হামলার মূল হোতা তামিম চৌধুরীর নাম। পুলিশ জানায় নব্য জেএমবি নেতা তামিমের পরিকল্পনায়ই গুলশানে হামলা চালানো হয়। পরে গত ২৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে তামিমসহ তিন জঙ্গি নিহত হয়।