খোলা বাজার২৪, রবিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬: লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে দেশের রফতানি আয়। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে এক হাজার ২৮৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বাংলাদেশ এক হাজার ২৮৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। সে হিসেবে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আট লাখ ৩০ হাজার ডলার বেশি রফতানি হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) হালনাগাদ) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের এই একই সময়ের তুলনায় দেশের রফতানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। এই পাঁচ মাসে বাংলাদেশ পণ্য রফতানি করে এক হাজার ২৮৮ কোটি ডলার আয় করেছে। এ বছরের শুধু নভেম্বর মাসেই গত বছরের একই মাসের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
গত অর্থবছরের এই পাঁচ মাসে রফতানি থেকে আয় হয়েছিল এক হাজার ২০৭ কোটি ডলার। এই হিসেবে পাঁচ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ বেশি আয় এসেছে দেশে।
এই সময়ে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে নিট পোশাক রফতানি থেকে- ৫২৩ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৫২২ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সময়ে নিট পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ওভেনে প্রবৃদ্ধি আরো বেশি, ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। নিট পোশাক রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। তবে ওভেনের আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে অর্থ্যাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয় গত বছরের প্রায় সমান ছিল। কিন্তু পাঁচ মাস পরে এসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মূলত অক্টোবর ও নভেম্বরের রফতানির ওপর ভর করে। অক্টোবর মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসু বলেন, অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এক সময় যেসব ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে চিন্তা করছিলেন, তারা সবাই এখন আমাদের এখান থেকে পণ্য কিনছেন। আমরা কম দামে যে মানের পোশাক রফতানি করি, পৃথবীর অন্য কোনো দেশ তা পারবে না। সে কারণে ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পোশাক কিনবেন- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
রফতানি বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, আমরা নতুন বাজারে নিট পণ্য রফতানি করছি। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রফতানিতে। দেশে স্থিতিশীল রাজনীতি থাকলে আগামীতে নিট পোশাক রফতানি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ওষুধ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
তবে হিমায়িত চিংড়ি রফতানি ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি কমেছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। কৃষি পণ্য রফতানি কমেছে ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। এবার তা ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
