খোলা বাজার২৪, সোমবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬: নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীনসহ চার নির্বাচন কমিশনার ও একজন সিনিয়র সহকারী সচিব।
বিচারপতি এম. মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার তাদেরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।
গত ৭ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এক আবেদনে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ ও ৯ নং ওয়ার্ড ভোটকেন্দ্রের ভোটে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারচুপির কারণে ভোট বাতিল বা পুনঃনির্বাচনের আবেদন করেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম।
আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ৬ নং চরভৈরবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম সিইসিসহ ছয়জনকে প্রতিপক্ষ করে হাইকোর্ট বিভাগে পিটিশন দায়ের করেন।
এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদেশের কপি পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে এ অভিযোগের নিষ্পত্তি করার জন্যে ১৬ জুন রুল জারিসহ আদেশ দেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশের কপি ইসি সচিবালয় ৩০ জুন ও আইন শাখা ১০ জুলাই তারিখে হাতে পায়। অভিযোগের নিষ্পত্তি হিসেবে ১৮ জুলাই প্রার্থীকে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার পরামর্শ দেয় ইসি।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একপত্রে অভিযোগের নিষ্পত্তির বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদুলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, স্থানীয় সরকার ইউপি আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দরখাস্ত পেশের মাধ্যমে প্রতিকার পেতে পারেন বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এ ইউপির ফল গেজেটে প্রকাশ না হওয়ার আগেই ইসির আদালতে যাওয়ার পরামর্শের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেন অভিযোগকারী।
জাহিদুল ইসলাম ইসির এ চিঠিকে চ্যালেঞ্জ করে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনাসহ সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিবকে আদালত অবমাননার দায়ে বিবাদী করে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন।
এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মিজানুর রহমানকে আদালত অবমাননার রুলসহ আদেশ দেন আদালত।
ফলাফল গেজেটে প্রকাশের আগে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার ইসির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চান আদালত। সেই সঙ্গে সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী সচিবকে কেন আদালত অবমাননার জন্য দায়ী করা হবে না- তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়।
গত ২৬ নভেম্বর সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার সশরীরে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হয়ে হলফনামা করে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।
এরপর গত ২৬ নভেম্বর সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রার শাখায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া’ সংক্রান্ত এফিডেভিটে স্বাক্ষরসহ আবেদন জমা দেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত রোববার তাদের অব্যাহতি দেন।