খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬: নওগাঁর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বহিরাগতদের হামলায় দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলাকালে বহিরাগরা হামলা চালালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন বহিরাগত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আর্কিটেকচার তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন রুমন (১৯) ও একই বিভাগের প্রথম পর্বের শিক্ষার্থী সৈকত কুমার (১৮)। তাঁরা দুইজনই নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী আরমান হোসেনের বাবা এবাদুল হক বাদী হয়ে গ্রেপ্তার ওই তিন যুবকসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার তিন যুবক হলেন, শহরের দক্ষিণ কালিতলার ইউনুস আলীর ছেলে ইমরান হোসেন (১৮), একই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে ইমরান কবীর সাহেল (২০) ও পালপাড়া এলাকার লক্ষণ চৌধুরীর ছেলে চন্দন চৌধুরী (১৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বার্ষিক ক্রীড়া সপ্তাহ উপলক্ষে কলেজ মাঠে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল। বেলা ১১টার দিকে লাঠি, চাপাতি ও হকিস্টিকসহ ১০-১২ জন বহিরাগত যুবক কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। কলেজে ঢুকেই তাঁরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আরমান হোসেনকে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করতে শুরু করে। এ সময় সৈকত কুমার নামে অপর শিক্ষার্থী তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁকে মারধর করে বহিরাগতরা। তাঁরা আরমান হোসেনের বা পায়ের গোড়ালি ও পিঠে এবং সৈকতকে পিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। বহিরাগতরা কলেজ ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সৈকত কুমার বলেন, ‘কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বসে সকাল থেকে আরমান ভাইসহ আমরা বেশ কয়েকজন কলেজ মাঠে চলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখছিলাম। বেলা ১১টার দিকে ইমরান ও চন্দনসহ ১০-১২ জন স্থানীয় বহিরাগত যুবক কলেজ ক্যাম্পেসে ঢুকেই আরমান ভাইকে মারপিট করতে শুরু করে। আমি মারামারি আটকাতে গেলে তাঁরা আমাকেও মারপিট করে। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে তাঁরা পালিয়ে যায়।’
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফজলুল হক জানান, কলেজ মাঠে বর্ষিক ক্রীড়া সপ্তাহ চলা অবস্থায় অতর্কিতভাবে ১০-১২ জন বহিরাগত যুবক কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানো হয়েছে। কলেজের অভ্যন্তরীণ ছাত্র রাজনীতি বা আধিপত্য বিস্তারের কারণে এই হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে মনে হচ্ছে। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
নওগাঁ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামসুল আলম শাহ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতরা হামলা চালায়। খবর পেয়ে আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন যুবককে আটক করা হয়। তাঁরা কেউই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নন। পরে আহত এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে এ বিষয়ে থানায় মামলা করলে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।