খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬: মুন্সীগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে ১১ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। মুন্সীগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ। একাত্তরের আজকের দিনে মুক্তিকামী মানুষের দুর্বার আক্রমণে দখলদার বাহিনীমুক্ত হয় মুন্সীগঞ্জ। ঐতিহ্যবাহী মুন্সীগঞ্জ জেলাকে মুক্ত করার সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি অনেক মানুষ শহীদ হন। অনেকের মৃত্যু হয় হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুর ও অমানুষিক নির্যাতনে।
তৎকালীন সরকারি হরগঙ্গা কলেজকে টর্চার সেল বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের স্বজনদের ধরে এনে বর্বরোচিত অত্যাচার চালাত পাকিস্তানি হায়নার দল। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহজুড়ে মুন্সীগঞ্জে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছিল হানাদার বাহিনী। হানাদারদের হামলায় কেবল একাত্তরের ডিসেম্বরেই গজারিয়ায় ৩৬০ জন, কেওয়ারে ১৭ জন ও আবদুল্লাহপুরে পালবাড়ীতে ১৪ জন নিহত হন।
এরপর জেলাকে শত্রুমুক্ত করতে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর অভিযান পরিচালনা করে মুক্তিবাহিনী। ঐক্যবদ্ধ সেই আক্রমণের কাছে পরাজিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর রাতে ধলেশ্বরী নদী পাড়ি দিয়ে হটে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি বাহিনী, হানাদারমুক্ত হয় মুন্সীগঞ্জ।
মুন্সীগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট রবিবার (১১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার সকাল ১০টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের জুবলী রোড হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
র্যালির পর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড প্রাঙ্গণের সড়কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান। মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন ইমদাদুল হক মিলন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুন্সীগঞ্জ জেলা ইউনিটের কমান্ডার আনিসউজ্জামান আনিস।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক শায়লা ফারজানা, সাবেক ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি কুতুব উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ হোসেন বাবুল, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাসেল মাহমুদ, সভ্যতার আলোর সম্পাদক মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল, সাংবাদিক তানভীর হাসান, ক্রাইমভিশন২৪ডটকমের সম্পাদক মোক্তার হোসেন, জেলা সিভিল সার্জন, ডা. শহীদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, মুক্তিযোদ্ধ এটিএম দেলোয়ার হোসেন, সদর ডিপুটি কমান্ডার শহীদুল্লাহ, সদর থানা কমান্ডার এম.এম কাদের মোল্লা, আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জেলা সভাপতি জালাল উদ্দিন রুমি রাজন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেরুন্নেছা নাজমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া জাহান সুমি প্রমুখ।