খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬: রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি যাওয়ার জন্য আবারও বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করল ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)।
আরসিবিসির দাবি, এর জন্য তাদের কোনো দায় নেই, বরং বাংলাদেশ ব্যাংকই দায়ী।
অর্থ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত আছেন- তদন্তসংশ্লিষ্ট এক বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স খবর প্রকাশের পরদিন মঙ্গলবার আরসিবিসি এমন দাবি করেছে।
এর আগে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনে গেলে আরসিবিসি সাফ জানিয়ে দেয়, অর্থ চুরি যাওয়ার জন্য তারা কোনোভাবে দায়ী নয়। ফলে তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না।
ফেব্র“য়ারি মাসে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের গচ্ছিত রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এ অর্থ আরসিবিসির মাকাতি শহরের জুপিটার স্ট্রিট শাখা থেকে পাঁচটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তোলা হয় এবং জুয়ার বাজারে চলে যায়। অবৈধ লেনদেনের জন্য ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসিকে ২০ হাজার ডলার জরিমানা করে। কিন্তু এখন তারা দাবি করছে, অর্থ চুরির জন্য তারা কোনোভাবে দায়ী নয়।
আরসিবিসির জুপিটার স্ট্রিট শাখায় পাঁচটি অ্যাকাউন্ট হয়ে বের হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আটকাতে বার্তা পাঠানো হলেও তারা তা আমলে না নিয়ে অর্থ ছাড় করে। এ অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। তবে আরসিবিসির দাবি, তারা ভুল কিছু করেনি।
আরসিবিসি তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা যেভাবে বলেছেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেম অনিরাপদ রেখেছেন, যাতে হ্যাকাররা সহজেই অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অর্থ চুরি করতে পারে, এত দিন আমরাও তাই বলে আসছি। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।
আরসিবিসির আইনজীবী থিয়ে দায়েপও একই সুরে কথা বলেছেন। তার মতে, বাংলাদেশের তদন্ত কর্মকর্তার তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তার অবহেলার কারণে অর্থ চুরি হয়েছে। এখন তারা এর দায় আরসিবিসির ওপর চাপাতে পারে না এবং এ নিয়ে কিছুই করার নেই।
থিয়ে দায়েপ বলেন, এ ধরনের অভিযোগ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কি না, তা তারা খতিয়ে দেখছেন।
সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক শাহ আলম রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সোমবার রয়টার্সকে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা জেনে বুঝে কম্পিউটার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে রেখেছিলেন, যাতে হ্যাকাররা রিজার্ভ থেকে চুরি করতে পারে। জড়িত কর্মকর্তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।
রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাকি অর্থ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।