Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬: 27
বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন চেয়েছেন পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা প্রত্যাশী বেলুচিস্তানের নেতা মীর সুলেমান দাউদ জান আহমেদজাই।
‘কালাতের খান’ উপাধিতে পরিচিতি স্বেচ্ছা নির্বাসিত এই বালুচ নেতা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের ‘দখলদারিত্বে’ আছেন তারা।

বুধবার এক সাক্ষাৎকারে আহমেদজাই বলেন, “তারা (পাকিস্তান) তোমাদের সঙ্গে যে নিষ্ঠুরতা করেছে, সেই একই কাজ আমাদের সঙ্গে করছে।” একাত্তরে মুক্তিকামী বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার প্রসঙ্গ তুলে একথা বলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
বেলুচিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন যোগাতে ২০০৭ সাল থেকে ব্রিটেনে অবস্থান করছেন আহমেদজাই। সেখান থেকেই তিনি ঢাকায় এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের একটি সেমিনারে অংশ নিতে। বেলুচিস্তানের স্থানীয়দের অনেকে আহমেদজাইকে দেখেন ‘রাজ্যহীন রাজা’ হিসেবে।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালের মার্চ থেকে পাকিস্তান বালুচদের ওপর ‘দখলদারিত্ব’ চালাচ্ছে। তখন থেকেই জনগণের আন্দোলন দমনে নিপীড়ন চালিয়ে আসছে পাকিস্তানি সরকার।
আহমেদজাই বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে, তা কূটনীতিকরা যেন বুঝতে পারেন, সেজন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চান তারা। ঢাকা যাতে বিষয়টি জাতিসংঘে তোলে, সে প্রত্যাশা তাদের।
২০১২ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার এক অধিবেশনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল বেলুচিস্তান প্রসঙ্গ নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ার করেন বলে জানান তিনি।
আহমেদজাই বলেন, “সদস্য না হওয়ায় আমরা জাতিসংঘে কথা বলতে পারি না। আমরা চাই সদস্য রাষ্ট্রগুলো আমাদের জন্য কথা বলুক।”
কিশোর বয়সে ১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে দুইবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে ‘একই সংকটের, এমনকি তার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছে। পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দাদের মাধ্যমে ম্যানিলা থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ বিস্তার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আহমেদজাই বলেন, “সাধারণ সন্ত্রাসী ও পাকিস্তানি আর্মির মধ্যে একমাত্র তফাৎ যে, তারা ইউনিফর্ম পরে এবং অন্যরা ইউনিফর্ম পরে না। উভয়ই সন্ত্রাসী। একজনের মাথার ওপর সরকারের ছায়া থাকে এবং অন্যজনের তা নেই।
“সন্ত্রাসীদের কারা পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থের যোগান দেয় তা খুঁজলে আপনি ম্যানিলা থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিটি সন্ত্রাসী চক্রে তাদের (পাকিস্তান) পাবেন।” পাকিস্তান বেলুচিস্তানে ‘হত্যা ও গুমের’ নীতি নিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা প্রতিদিন বর্বরতা চালাচ্ছে।
“২৫ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ এবং দশ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত। প্রথম মানুষ নিখোঁজ হয়, তারপরে তাদের পাওয়া যায় জঙ্গলেৃনির্যাতিত, বুলেটবিদ্ধ।” বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাই একমাত্র চাওয়া জানিয়ে আহমেদজাই বলেন, “আমরা আশাবাদী।”
“এক্ষেত্রে আপনারা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন আমরাও সে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। আপনারা ভাগ্যবান আপনাদের জাতির জনকের জন্য, যিনি নিজেকে উৎসর্গ করতে পেরেছিলেন এবং আপনারা নিজেদের দেশ পেয়েছেন। “আমরা এখনও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং আমরাও আমাদের দেশ পাব।”