খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬:
শীত মৌসুম এলেই হাতে ও ঘাড়ে তীর ধনুক নিয়ে আদিবাসী সাঁওতালরা বিভিন্ন প্রজাতীর বন্যপ্রাণি শিকারেই যেন তাদের আনন্দ। গ্রামের গৃহিনীদের দাবির পরিপেক্ষিতে তারা এধরণের বন্যপ্রাণি শিকার করে থাকে। শীত মৌসুমে ধান কাটা মাড়াই শেষে তারা নেমে পড়ে তীর ধনুক নিয়ে শিকার করতে। ফলে একদিকে যেমন বন্যপ্রাণি হচ্ছে ধ্বংস হচ্ছে অন্যদিকে শিকার করতে পেরে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ছেন তারা। সম্প্রতি দেখা যায়, উপজেলা চান্দুড়িয়া হাড়দহ বিলে বন বিড়াল বা বনগাওড়া শিকার করে নিয়ে আসছিল চার পাঁচজন আদিবাসী সাঁওতাল কিশোর। তাদের এসময় স্কুলে যাওয়ার কথা। কিন্তু স্কুলে না গিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন শিকারে।
তাদের হাতে ছিল তীর ধনুক লাঠি, কুস, বল্লম সহ শীকারে জাবতীয় আসবাবপত্র। তাদের কাছে থাকা লাঠিতে করে দুটি বনবিড়াল বা বন গাওড়া শিকার করে ঘাড়ে দুইজন বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে শান্ত নামের একজন জানাই এ সময়টায় জমিতে ধান না থাকার কারণে গ্রামের গৃহিনীদের পালিত হাঁস মুরগির বাচ্চা খেয়ে ফেলে বন বিড়াল বা বনগাওড়া এবং বেজি। হাড়দহ গ্রামের অনেকের কথার প্রেক্ষিতে শিকারে যায় আমরা। মাত্র দুটি বন বিড়াল বা বনগাওড়া শিকার করা গেছে। উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ভাবে শিকার করা হয় বলে জনায় তারা। এ উপজেলায় আদীবাসী সাঁওলাদের বসবাস ব্যাপক হারে। এছাড়াও তালন্দ ইউপির কালনা গ্রামে ব্যাপক হারে বসবাস আদীবাসী সাঁওতালদের। গ্রামটিতে বনজঙ্গলে ভরপুর। প্রায় বাড়ি থেকে প্রতি রাতে হাস মুরগি খেয়ে ফেলে এজাতীয় বন্য প্রাণি। এ গ্রামের কিশোর সাঁওতালরা বাড়ি জঙ্গল ঘিরে বন্য প্রাণি শিকার করে থাকে। গ্রামের গৃহিনীরা জানায় যদিও বন্য প্রাণি শিকার করা ঠিক না। কিন্তু উপায় কি? প্রতিদিন হাস মুরগি খাবেই এসব প্রাণি। এজন্যে আমরা বাধ্য হয়ে আদীবাসী সাঁওতালদের খবর দিয়ে শিকার করতে বলি। শুধু এইসব বন্য প্রাণি না বাড়িতে থাকা খাবার ধ্বংসকারী ইঁদুরের ব্যাপক উপদ্রব হলে হাজির হন শিকারের জন্যে আদিবাসী কিশোরেরা। তাদের এসব শিকারে কোন নজরদারি নেই। এজন্যে বেপরোয়া ভাবে তারা শিকার করে থাকেন। এ নিয়ে তানোরের বনকর্মকর্তা বা ফরেস্টার দেবাশীষদে জানান, তারা কখন কোথায় কিভাবে শিকার করেন এটা আমার অজানা। তবে কিছু বন্য প্রাণি ব্যাপক হারে হাস মুরগি খেয়ে ফেলে। এজন্যে তারা শিকার করেন বলে শুনেছি। তবে কোন ক্রমেই বন্য প্রাণি ধ্বংস করা যাবে না বলে জানান তিনি।