Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

41kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬: ঠাকুরগাওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বধ্যভূমি খুনিয়াদিঘি পাক বাহিনীর নির্মমতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাক হায়েনাদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া লাশের দুর্গন্ধের সাক্ষী খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধ। ১৯৭১ সালে বাঙ্গালী জাতি যখন নায্য দাবি আদায়ের সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে তখন পাকিস্তানি শাষক গোষ্টি তা মেনে নিতে পারেনি। তারা চেয়েছিল ক্ষমতার জোরে আর বন্ধুকের নলা ঠেকিয়ে পায়ের জুতার পিসে বাঙ্গালী জাতিকে অসহায় নিরূপায় করে রাখতে। কিন্তু বাঙ্গালীর বীর ছেলেরা পরাধিনতা মেনে নিতে না পেরে যুদ্ধে ঝপিয়ে পড়ে। স্বাধীকার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ায় নিরস্ত্র বাঙালীর উপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ, অত্যাচার, ধর্ষণ, লুন্ঠন চালানো হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বুদ্ধি জীবি, সুশীল সমাজ সহ সাধারণ জনতাকে ধরে এনে রাণীশংকৈল থানায় আটক করে রাখত। এক মুঠো খাবার, এক ফোটা পানি তাদের মুখে তুলে না দিয়ে ৩-৪ দিন আটক করে রাখার পর রাতের বেলা আনা হত খুনিয়াদিঘিতে। হাত চোখ বেধে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলা হত। এ সময় পানি দাও, মা বাবা বাঁচাও এমনি কত আর্তনাদে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠত। কেউ হায়েনাদের হাত থেকে বাঁচাতে পারতো না করুন আর্তনাদের মানুষগুলোকে। ব্রাশ ফায়ারের পর কেউ কেউ প্রাণ হারালেও অনেকে জীবিত থাকতো। তাদের আর্তচিৎকারে পুরো এলাকা স্থম্ভিত হয়ে যেত। জীবিত অবস্থায় তাদের পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হতো তাদের। পুকুরের পানি স্বাধীনতা লাভের অনেক পরেও রক্তে রঞ্জিত হয়ে ছিলো বলে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান জানান। সারারাত লাশ খাওয়ার ধুম চলতো বাঘ শিয়াল হিংস্র প্রাণীগুলোর। আর দিনের বেলা চলতো শকুনদের লাশ খাওয়ার মহা উৎসব। যুদ্ধকালীন কমান্ডার ভান্ডারা গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে সিরাজুল, মুক্তিযোদ্ধা হবিবর খুনিয়াদিঘির হত্যা যজ্ঞের করুন কাহিনী বর্ননা করেন। ঠাকুরগাও-৩ আসনের সাংসদ অধ্যাপক মোঃ ইয়াসিন আলী বলেন, পাক বাহিনী স্থাণীয় রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় কয়েক হাজার মানুষকে ধরে এনে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। এটি একটি বড় মাপের বধ্যভূমি। এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হলেও এটিকে আধুনিকায়ন করার চিন্তা রয়েছে। তাছাড়া এখানে একটি জাদুঘর নির্মানের ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।