খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬:
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গাছে সঙ্গে বেধে গৃহবধুকে নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে মোজাম্মেল মিয়া বাদী হয়ে লিলি আক্তারকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নির্যাতিত ও থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের মোনার পাড়া গ্রামের কসিম মন্ডলের ছেলে মোজাম্মেল মিয়া একই ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামে কসিম মিয়ার মেয়ে লিলি আক্তারকে সাথে ১৯৮৯ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মোজাম্মেল ও লিলি আক্তারের মধ্যে দাম্পত্ব্য জীবনে তাদের সংসারে ৪ সন্তান আসে। হঠাৎ করে ২০০২ সালে ১বছরের শিশু রবিনকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী মোজাম্মেলকে ছেড়ে দিয়ে লিলি আক্তার পাশের বাড়ীর আব্দুল মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলামের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। লিলি আক্তার চলে যাওয়ার ৩ বছর অপেক্ষার পর মোজাম্মেল মিয়া তালাক দেয়। পরে পাশের বগারপাড় গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে কল্পনা বেগমকে বিয়ে করেন। বর্তমানে মোজাম্মেল ও কল্পনার সংসারে সুখেই জীবন যাপন করে আসছিল। কিছু দিন ধরে লিলি আক্তার মোজাম্মেলের চাচা সাথে যোগসাজস করে মোজাম্মেলের সংসারে ফিরে আসার জন্য পায়তারা চালিয়ে আসছে। বর্তমার স্ত্রী কল্পনা বেগমকে ছেড়ে দিয়ে লিলি আক্তারকে ফের বিয়ে করার জন্য চাচা আব্দুর রহমার ও আব্দুর রাজ্জাকসহ তার দলবল প্রস্তাব দেয় মোজাম্মেলকে। মোজাম্মেল এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি । এ সংবাদ কল্পনা বেগম তার বাবার বাড়ীতে জানালে মা ফজিলা বেগম ও নানী রাবেয়া বেওয়া মোনারপাড়া গ্রামে মোজাম্মেলের বাড়ী আসে। গত রোববার সকালে জামাই মেয়েসহ ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে বিচারের দাবী করেন। পরে মোজাম্মেল মিয়া, কল্পনা বেগম, ফজিলা বেগম ও নানী শাশুরী রাবেয়া বেওয়াকে নিয়ে দুপুরে বাড়ী ফিরে আসে । ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুর রহমান তার লোকজন নিয়ে মোজাম্মেলকে ঘরের ভিতর আটকে রেখে কল্পনা বেগম, ফজিলা বেগম ও রাবেয়া বেওয়াকে বাড়ীর কাঠাল গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেধে মারধর করে। তাদের চিৎকারে আশপাশে লোকজন এগিয়ে আসলে আব্দুর রহমান ও তার লোকজন ঘটনাস্থল পালিয়ে যায়। পরে দড়ির বাধন খোলে তাদেরকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে মোজাম্মেল মিয়া বাদী হয়ে লিলি আক্তার, আব্দুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, রাশেদুল ইসলাম ও লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। নির্যাতনের শিকার কল্পনা বেগম, ফজিলা বেগম ও রাবেয়া বেওয়া হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী এস আই রফিক জানান, মোজাম্মেল বাদী হয়ে লিলি আক্তারকে প্রধান আসামী করে ৫জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।