খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬: পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমার্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলমের (আনারস প্রতিক) বিরদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর পক্ষের ভোটারদের হুমকী ও নানা ভয়ভীতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার পিরোজপুরের কাউখালীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলমের সমার্থনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও থানার সামনে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মাঠে প্যান্ডেল করে নির্বাচনী জনসভা করেছেন। এ ঘটনায় তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্গন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজ (কাপ পিরিচ প্রতিক) এবং আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (চশমা প্রতিক)।
নির্বাচন কমিশনের জেলা পরিষদ আইন ২০০০(২০০০সনের১৯ নং আইন) এর ধারা ২০(২) এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে যে বিধি মালা জারী করেছে তাতে কোন প্রার্থী ঘরোয়া সভা ব্যতিত কোন পথসভা বা জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না।
মহিউদ্দিন মহারাজ অভিযোগ করে বলেন, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া এবং স্বরূপকাঠী থেকে নেতা-কর্মীরা আনারস মার্কার সমার্থনে মিছিল এবং শোডাউন করে সভায় যোগ দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন আচারন বিধিতে সরকারী ডাকবাংলোসহ কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে না, কিন্তু মঙ্গলবার সমাবেশে শুরু হওয়ার আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল হাকিম হাওলাদারসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে অবস্থান করেন। এছাড়া সমাবেশ শেষে দুপুরে কাউখালী সরকারী বালক বিদ্যালয়ে প্রায় পাচঁ শতাধিক নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর পিরোজপুরের জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করে জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক থেকে পদত্যাগের পরেও জেলা পরিষদ ভবনে জেলা পরিষদের চেয়ারে বসে দাপ্তরিক কাজ করেছেন।
এদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজের ভোটার এবং ইউপি সদস্যদের নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুমকীর কারনে জেলা পরিষদের ভোটার অনেক ইউপি সদস্য নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহ আলমের পক্ষে ভোট দেখিয়ে দেয়ার জন্য তাদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নের ৭ং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন তাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। হুমকীর কারনে তিনিসহ বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য বর্তমানে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে তারা শংকিত।
অন্যদিকে, গত শুক্রবার দুপুরে নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের উপর হামলা করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকরা। হামলায় মাসুদ নামে এক ইউপি সদস্য আহত হয়। জেলার আমড়াজুড়ি ফেরীঘাটে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন ইউপি সদস্যরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজের এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেয়ার জন্য একটি মাইক্রোবাস যোগে নাজিরপুর থেকে স্বরূপকাঠী হয়ে ভান্ডারিয়া যাচ্ছিল।