খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬: রাশিয়ায় মদের বিকল্প হিসেবে অ্যালকোহলযুক্ত বাথ লোশন পান করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
এরআগে এই ঘটনায় ৪১ জনের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হয়েছি।
বিবিসি বলছে, লোশন পানে করে অসুস্থ হয়ে যাওয়া অন্য ৩৭ জনের অধিকাংশকে এখনো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
রুশ তদন্তকারী কমিটি জানিয়েছে, উচ্চমাত্রার বিষাক্ত হোথর্ন বেরির সুবাসযুক্ত তরল নিরাপদ মদ গণ্য করে পান করার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে।
কিন্তু এতে বিষাক্ত মিথানল ছিল যাতে অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
দ্য সার্বিয়ান টাইমস জানিয়েছে, রাশিয়ার আধুনিক সময়ের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে ইরকুটস্ক শহরের এই গণবিষক্রিয়াই সবচে ভয়াবহ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলেগ ইয়ারোশেঙ্কো বলেন, যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেই বেঁচে ফিরবেন না বলেই আশঙ্কা। তাদের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর।
ইয়ারোশেঙ্কোকে উদ্ধৃত করে সার্বিয়ান টাইমস জানিয়েছে, “তারা চিকিৎসকদের কাছে অনেক দেরিতে এসেছেন। শুধুমাত্র দৈবই তাদের রক্ষা করতে পারে।”
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে একজন চিকিৎসক এবং কিন্ডারগার্টেনের একজন শিক্ষকও রয়েছেন। অনেকেই নিজেদের ঘরেই মারা গেছেন। কারণ তারা অ্যাম্বুলেন্স ডাকার জন্য যথেষ্ঠ সময় পাননি।
মারা যাওয়া অধিকাংশের বয়স ৩৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তবে তারা একসঙ্গে পান করেনি।
এই ঘটনার পর বিভিন্ন দোকান থেকে মিথানল সমৃদ্ধ হোথর্ন বেরির সুবাসযুক্ত ওই বাথ লোশনের বোতলগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
যদিও বোতলের গায়ে এটা খাওয়া যাবে না সতর্কবার্তা দেওয়া ছিল বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বিশেষ করে দরিদ্রদের মধ্যে মদের পরিবর্তে এ ধরনের গৃহস্থলিপণ্য পানের প্রবণতা রয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ দুর্ঘটনাকে ‘নিদারুণ দুঃখজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে কর্তৃপক্ষকে এ ধরণের পণ্য দ্রুত নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন।
টেলিভিশনে এক ভাষণে তিনি বলেন, “এটা একটি নারকীয় ঘটনা এবং আমাদের এটা শেষ করতে হবে।”
গেল মাসে রাশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার খ্লোপোনিন বলেছিলেন, রাশিয়ার অনেক নাগরিক যেসব ওষুধ ও সুগন্ধিতে ২০ শতাংশের বেশি অ্যালকহল থাকে সেগুলো মদের বিকল্প হিসেবে পান করে।
এই ঘটনার জেরে পুলিশে লোশন উৎপাদনকারী একটি অবৈধ কারখানার খোঁজ পেয়েছে। এর মালিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।