Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬: 31ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)-২০১৫-১৬ আজ বৃহস্পতিবার (২২ -১২- ২০১৬) আইডিইবি ভবন,কাকরাইল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি জনাব আব্দুল মাতলুব আহ্মাদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি জনাব মোঃ সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), এফবিসিসিআই পরিচালকবৃন্দ এবং এফবিসিসিআই এর সাধারন পরিষদ সদস্যবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি জনাব আব্দুল মাতলুব আহ্মাদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, এফবিসিসিআই-এর সাধারণ পরিষদ সদস্যদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ নিয়মিত কার্যক্রম ছাড়াও বেশকিছু নতুন কার্যক্রম গ্রহন করেছে। এসব কার্যক্রম সম্পাদনে সাধারণ পরিষদ সদস্যদের অকৃত্রিম সহযোগিতা এবং সমর্থনের জন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতির বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রদান করা হলো ঃ
দক্ষিণ এশিয়ার একটি অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন হয়েছে যা বেসরকারি খাতকে যথাযথভাবে বিকশিত করতে সহায়তা করেছে। অপরদিকে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের ফাস্ট ট্রাক কার্যক্রম বাস্তবায়নের পদক্ষেপ এদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
গত ২৭-৩০ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে এফবিসিসিআই-এর একটি বানিজ্য প্রতিনিধিদল হাঙ্গেরী সফর করেছে। সফরকালে দু’দেশের বানিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে এফবিসিসিআই এবং হাঙ্গেরী চেম্বার অব কমার্স-এর মধ্যে একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ক্স চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চীনের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরকালে এফবিসিসিআই-এর উদ্যোগে বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস টক ও স্মারক স্বাক্ষ অনুষ্ঠান এবং চায়না-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম-এর আয়োজন দু’দেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ স্থাপনে ছিল মাইলফলক। এর ফলশ্রুতিতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। গত ১৩ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে চীনের ৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে ১৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ও আমদানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অপরদিকে ১৪ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে ১৩টি বাংলাদেশী সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চীনের ৯টি প্রতিষ্ঠানের সাথে ১৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অবকাঠামো, জ্বালানি এবং রপ্তানি পণ্য উন্নয়নের জন্য যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করে।
ক্স এছাড়া চলতি বছরে দেশের বাণিজ্য উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও শ্রমবাজার সম্প্রসারণে এফবিসিসিআই-এর অন্যতম কার্যক্রম হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের যুক্তরাষ্ট্র, বুলগেরিয়া, জাপান, সৌদী আরব এবং হাঙ্গেরী সফর। সফরকালে ঐ সকল দেশের বাণিজ্য সংগঠনসমূহের সাথে এফবিসিসিআই-এর বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যা দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ক্স ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আমরা জিডিপির ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চক্র থেকে ৭.১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। উক্ত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৪৬৫ মার্কিন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে যা ছিল ১৩১৪ মার্কিন ডলার। মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫.৫৭ শতাংশে।

ক্স ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৪.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৭২%। ওভেন গার্মেন্টস এবং নীটওয়্যারের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১২.৭ এবং ৭.৩ শতাংশ। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি দেশসমূহ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশসমূহে পূর্বের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে। অপরদিকে উক্ত অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২.৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমাদের রপ্তানীনির্ভর শিল্পসমূহে কিছুটা প্রভাব পড়লেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৩১.২৮ শতাংশ যা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ছিল ৩০.৭৮ শতাংশ। সেবা খাতের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করে কৃষি এবং শিল্প খাতের উন্নয়নের উপর। জিডিপিতে সেবা খাতের অবদান ৫৩.৩৯ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৭ শতাংশ।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে প্রায় ১৩.২০ কোটি এবং ৬.২০ কোটি।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭.২% এবং মূল্যস্ফীতির পরিমান ৬%-এর নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট ঘোষনা করেছে যার পরিমান গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৯% বেশী। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য হিসেবে উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে সামনে রেখে এ বাজেট জাতীয় সংসদে অনুমোদিত হয়েছে।
সরকার ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মধ্যে বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১০.৩% থেকে ১৫.৩%-এ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বর্তমান করদাতার সংখ্যা ১২ লক্ষ থেকে আরও ৩ লক্ষ বৃদ্ধি করতে হবে। করদাতাদের কর পরিশোধে আগ্রহী করার লক্ষ্যে হয়রানিমুক্ত কর পরিশোধ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কর পরিশোধ পদ্ধতি সহজিকরণ ও আধুনিকীকরণের জন্য বাজেটে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা যা জিডিপি’র প্রায় ১২.৪%। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লক্ষ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র প্রায় ১০.৪% এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র প্রায় ০.৪%। কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা যা জিডিপি’র প্রায় ১.৬%। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) নির্ধারন করা হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা যা জিডিপি’র প্রায় ৫.৬%।
সরকার এফবিসিসিআইয়ের বাজেট পরবর্তী কিছু প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করেছে। অন্যান্য যে সমস্ত শুল্ক ও কর সংক্রান্ত সুপারিশমালা বাজেটে গ্রহন করা হয়নি সে প্রস্তাবগুলি যেন পুনর্বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয় সেজন্য আমরা সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে আমরা কয়েকবার সভায় মিলিত হয়েছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি কোর কমিটি এফবিসিসিআইয়ের আমদানি শুল্ক, মূসক ও আয়কর সংক্রান্ত বাজেট পরবর্তী প্রস্তাবসমূহ পুনর্বিবেচনার বিষয়ে কাজ করছে। আমরা আশা করছি এসব বিষয়ে অচিরেই একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেখতে পাব।
দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্যাকেজ ভ্যাট বিষয়ে তাদের কিছুু প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। এ সমস্ত দাবি বিবেচনার জন্য এফবিসিসিআইও সরকারের নিকট অনুরোধ জানিয়ে আসছে। আমরা আশা করব সরকার এ সুপারিশসমূহ যথাযথভাবে বিবেচনা করবে।
দেশের রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়া সহজিকরণ এবং আরও বানিজ্য বান্ধব করার মাধ্যমে ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির লক্ষ্যে এফবিসিসিআই-জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পার্টনারশিপ বা অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম দিনদিন জোরদার হচ্ছে। মূল্য সংযোজন কর, আয়কর ও আমদানি শুল্ক বিষয়ে বিরাজমান সমস্যাসমূহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য এফবিসিসিআই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে করদাতাদের কর প্রদানে আরও আগ্রহী করতে এফবিসিসিআই এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যৌথভাবে ক্যাপাসিটি
এফবিসিসিআই-এর উদ্যোগে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন মন্ত্রী ও অন্যান্য প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের অবস্থিত বিদেশী মিশনসমূহের কুটনীতিকবৃন্দের সাথে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। এ সবের মধ্যে রয়েছে চীন, ইরান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ঘানা, ইরান, কেনিয়া, শ্রীলংকা, স্লোভেনিয়া, কুয়েত, জেট্রো, তুরস্ক, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, দক্ষিণ আফ্রিকা, পোল্যান্ড, ভুটান, নেপাল ও জাপানি প্রতিষ্ঠান জেটরো।
এফবিসিসিআই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, জাপান, ভারত, ইরান, মালয়েশিয়া, নেপাল, চীন, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স এবং বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছে।
এফবিসিসিআই প্রতিনিধিদল গত ১৪ জুলাই, ২০১৬ তারিখে ভারতের কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভূটান-ইন্ডিয়া-নেপাল (বিবিআইএন) বিজনেস ফোরামে অংশগ্রহন করেছে। এছাড়াও এফবিসিসিআই-এর একটি প্রতিনিধিদল ১৫-১৭ জুলাই, ২০১৬ তারিখে শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত বিবিআইএন বিজনেস এক্সপো-তে অংশগ্রহন করেছে। গত ২০-২১ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে তুরস্কে অনুষ্ঠিত ডি-৮ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ইজমির সভায় আমরা অংশগ্রহন করেছি। চীনের জিয়ানে অনুষ্ঠিত ৫-৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত জিয়ান রোড বিজনেস সামিট এবং কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স-এ এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সংগঠনের মহাসচিব অংশগ্রহন করেছেন।
তাইওয়ানে গত ২৩-২৫ নভেম্বর, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ৩০তম ঈঅঈঈও সম্মেলনে এফবিসিসিআই-এর প্রতিনিধিদল অংশগ্রহন করেছে। এ সম্মেলনে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ‘বেস্ট লোকাল চেম্বার’ এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। সেসাথে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ‘লেটার অব এ্যাপ্রিসিয়েশন ’ অর্জন করেছে। উভয় অর্জনই দেশের শীর্ষ বানিজ্য সংগঠন হিসেবে এফবিসিসিআইকে গৌরবান্বিত করেছে।
প্রতিবছরের মত এবারও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাক্কালে এফবিসিসিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এফবিসিসিআই সদস্যসংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত মতামত পর্যালোচনাপূর্বক বেসরকারি খাতের স্বার্থ বিবেচনা করে এফবিসিসিআই এর বাজেট বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ও সাব-কমিটিসমূহ আয়কর, মূসক ও আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রণয়ন করে। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক একাধিক সভা আয়োজন করে এফবিসিসিআই এর বাজেট প্রস্তাবনা চুড়ান্ত করে সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
দেশের সকল এলাকায় শিল্পায়ন ও শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক কাঁচামালের সহজ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এফবিসিসিআই জেলায় জেলায় শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
এফবিসিসিআই সচিবালয়ের দক্ষতা উন্নয়ন ঃ এফবিসিসিআইয়ের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে এফবিসিসিআই সচিবালয়ে বেশ কয়েক জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এফবিসিসিআই রিফর্মস ঃ এফবিসিসিআই রিফর্মস ইস্যুকে এফবিসিসিআই-এর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম হিসেবে গ্রহন করেছে। রিফর্মস-এর বিষয়ে এফবিসিসিআই একটি কমিটি গঠন করেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও এফবিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি জনাব সালমান এফ রহমানকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উভয় কমিটি রিফর্মস বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি উভয় কমিটির যৌথ সহযোগিতায় রিফর্মস বিষয়ে একটি ইতিবাচক ফলাফল পাব।
আমরা ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের আয়-ব্যয় বিবরণী ও ব্যালেন্স সীটসহ অডিট রিপোর্ট পেশ করেছি। এই রিপোর্টে ১২ মাসের প্রয়োজনীয় হিসাব দেখানো হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে আমাদের মোট আয় হয়েছে ৭ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৬ হাজার ২৮১ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৮৪ হাজার ২৩৪ টাকা মাত্র। খরচ বাদে উদ্বৃত্ত আয়ের পরিমাণ ৫৮ লক্ষ ৪২ হাজার ছেচল্লিশ টাকা।
আমি ইতিমধ্যে আপনাদের কাছে দেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং এর উন্নয়নে এফবিসিসিআই এর কার্যক্রম তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি বাধা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, বিতর্ক বিরোধ নিষ্পত্তি, প্রকল্প গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রম উপস্থাপন দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় এবং এফবিসিসিআই এর সমন্বয়ে পাবলিক-প্রাইভেট ফোরাম গঠন করা আবশ্যক বলে আমি মনে করি।
পরিশেষে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রমে প্রশংসনীয় সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য সম্মানিত সাধারণ পরিষদ সদস্যবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ২০১৬ সালে তাদের অমূল্য অবদান আমাদেরকে সফলভাবে এফবিসিসিআই-এর দায়িত্ব পালনে সাহায্য করেছে। কার্য-সম্পাদনে সহায়তা এবং আন্তরিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমরা এফবিসিসিআই সচিবালয়কে ধন্যবাদ জানাই। বেসরকারি খাতের স্বার্থ সংরক্ষণে এবং এফবিসিসিআই-এর কার্যক্রম প্রচারে সদয় সহযোগিতা করার জন্য আমরা অবশ্যই প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বন্ধুদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আমি আবারও সঠিক দায়িত্ব গ্রহণ ও কার্যকরীভাবে তা পালনে আমাদেরকে সহৃদয় সহায়তা প্রদানের জন্য সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা সাথে নিয়ে আগামী বছরেও আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

সভায় বিপুল সংখ্যাক সাধারণ পরিষদ সদস্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশ নেন।
এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি জনাব মোঃ সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) সভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন।