Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬:14
রূপচর্চায় নারীরা এগিয়ে থাকলেও দিনে দিনে পুরুষরাও মনোযোগী হচ্ছেন। যেসব পুরুষ একটু মসৃণ ও লাবণ্যময় করে নিজেদের উপস্থাপন করতে আগ্রহী তাদের অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।

স্বাভাবিকভাবেই পুরুষদের ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটাতে হয়। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ধুলোবালির প্রলেপে ত্বকের রঙ তামাটে, রুক্ষè ও ম্লান হয়ে যায়। তাই পুরুষদের ত্বকের এ রুক্ষèতা দূর করতে নিয়মিত যতেœর প্রয়োজন। এ ছাড়া পুরুষের ত্বক মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি পুরু। তাই মেয়েদের ত্বকচর্চা থেকে পুরুষদের রূপচর্চার ধরনটাই আলাদা। ছেলেদের সবচেয়ে বেশি সমস্যার জায়গা হলো ভ্রু রেখার ভাঁজ, চোখের কোণার ত্বকে কুঁচকে যাওয়া দাগ, ঝুলে পড়া গাল আর এবড়ো-থেবড়ো ছিদ্রযুক্ত অমসৃণ ত্বক। অবশ্য ত্বকের যতেœ পুরুষরা এখন অনেক সচেতন। পার্লার বা সেলুনগুলোতে তারা শুধু চুল কাটতে নয়, এর পাশাপাশি চুল সাজানো, শ্যাম্পু, মেনিকিউর, ব্লিচ, ফেসিয়াল, বডি ম্যাসাজ, বডি প্যাকও করছেন।
এ কারণে শুধু ছেলেদের রূপচর্চার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে আলাদা পার্লার। এসব জায়গায় পুরুষের ত্বকের সমস্যা, চুল পড়া, চুল বেঁকে যাওয়া, খুসকি দূর করা ইত্যাদি জটিলতায় পরামর্শ ও সমাধান দেওয়া হয়। হাত পায়ের যতেœর জন্য রয়েছে মেনিকিউর, পেডিকিউর, ব্লিচ, ম্যাসাজ ইত্যাদি। রোদ, বাইরের ময়লা, বিভিন্ন দূষণ ইত্যাদি ত্বককে করে তোলে শুষ্ক ও রুক্ষè। প্রতিদিন তাই ত্বকের যতœ নেওয়া উচিত। দাড়ি কামানো প্রায় সব পুরুষের প্রতিদিনকার কাজ। এ ছাড়াও তাদের ত্বক অনুযায়ী প্রয়োজন প্রতিদিনের যতœ।
পুরুষরা বেশিরভাগ সময়ে বাইরে কাটান। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে হাত মুখ ধুয়ে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে নেওয়া উচিৎ। সাথের ব্যাগটিতে রাখতে হবে কোনো একটি ফেসওয়াশ। ব্যস্ত শহরের যানজট আর ধুলোবালির মধ্য দিয়ে অফিসে পৌঁছে প্রথমেই ব্যাগে রাখা ফেসওয়াশটি দিয়ে একটু হাত মুখ ধুয়ে এলে কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় ভালো ভাবে।
ধুলোবালি ও ঘাম থেকেই সৃষ্টি হয় নাকের দুই পাশে, ঠোঁটের কোণে, থুতনির কাছে ব্ল্যাক-হেডসের মতো ত্বকের নানান সমস্যা। যারা সারা দিনে হাত-মুখ পরিষ্কার করার সময় পান কম তাদের মাসে অন্তত একদিন কোনো ছেলেদের বিউটি সেলুনে গিয়ে ফেসিয়াল করানো উচিত। যাদের শুষ্ক ত্বক তারা সানবার্ন ফেসিয়াল করাতে পারেন। এটি রোদে পোড়া ত্বকের জন্যও উপকারি। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা অ্যালোভেরা ও গোল্ড ফেসিয়াল করাতে পারেন। যাদের ত্বকে ব্রনের সমস্যা রয়েছে তারা আয়ুর্বেদিক ফেসিয়াল করালে উপকার পাবেন।
আর যারা ঘরে বসে ত্বকের যতœ নিতে চান তারা রোদে পোড়া ভাব কমাতে চন্দনের প্যাক লাগাতে পারেন। এখন বাজারে নানা ধরনের স্ক্রাব পাওয়া যায়। এসব স্ক্রাব দুই তিনদিন পর পর মুখে লাগিয়ে কিছু সময় ম্যাসেজ করে ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া মাঝে মাঝে রাতে ঘুমানোর আগে উপটান লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে ব্ল্যাক-হেডস থাকলে গরম পানিতে কিছু সময় ভাপ নিয়ে আস্তে আস্তে দুই আঙ্গুলের ডগা দিয়ে চেপে ব্ল্যাক-হেডস বের করতে পারেন।
চুলের যতœ
নারী পুরুষ প্রত্যেকের কাছেই চুল শরীরের একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় অংশ। তাই নিয়মিত চুলের যতœ নেওয়া প্রয়োজন। চুলের নিজস্ব কোনো রক্তনালী নেই। ত্বকের পুষ্টি থেকেই চুল পুষ্টি পায়। আর আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তা থেকেই আমরা এ পুষ্টি পেয়ে থাকি। তাই সুন্দর চুলের অধিকারী হওয়ার জন্য পুরুষদেরও খানিকটা কষ্ট করতে হয়। চুলে নিয়মিত তেল দেওয়া, চুল শ্যাম্পু করা, কন্ডিশনিং করা খুবই জরুরি কাজ। আর যদি সম্ভব হয় তবে সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলে মেহেদি ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
খুশকি হলে
এটি একটি সাধারণ সমস্যা। যদি কারো অনেক দিন ধরে খুশকির সমস্যা থেকে থাকে তবে মুখে ব্রন হওয়া, চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। চুলের হালকা তেল ম্যাসাজ অনেক ক্ষেত্রেই এ সমস্যার সমাধান করে। মেহেদি খুশকির সমস্যার সমাধানের সহায়ক। এরসঙ্গে ডিমের সাদা অংশ, দই, কফি, অল্প গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে মাথায় লাগান। আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
চুল পড়ার কারণ
চুল পড়তে পারে নানা কারণেই। ২০-২২ বছর বয়সের পর থেকেই চুল কমতে শুরু করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে হরমোন এন্ড্রোজেনই প্রধানত চুল পড়ার জন্য দায়ী। এ হরমোন পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি থাকে। তাই তাদের চুল বেশি পড়তে দেখা যায়। আবার বংশানুক্রমে কোনো পরিবারে এ হরমোনের প্রতি হেয়ার ফলিকলের সংবেদনশীলতা বেশি থাকলে সেই বংশের ছেলেদের টাক পড়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে এখন মাথা কামিয়েও রাখেন অনেকে। বেশি চুল পড়ে টেকো হয়ে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে মাথা কামিয়ে নতুন স্টাইল ধরাটা কিন্তু মন্দ নয়।
সুদর্শন পুরুষ মানেই আমরা বুঝি সুন্দর ত্বক, সুন্দর চুল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একজন। আর এ সব কিছুর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যতœ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিমিত আহার ও একটি ভালো ঘুম।