খোলা বাজার২৪,বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬: দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশের ৫৯ জেলায় বুধবার সকাল ৯টা থেকে একটানা বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচন কমিশন ৬১ জেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা করলেও ভোলা ও ফেনী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই দুই জেলায় ভোট গ্রহণ হবে না।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় আরও ১৯ জন চেয়ারম্যান, ১৬৬ জন সাধারণ সদস্য ও ৬৯ জন সংরক্ষিত সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে আজ ৩৯ জেলার চেয়ারম্যান এবং ৫৯ জেলায় সদস্য পদে ভোট হবে। ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৪৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২ হাজার ৯৮৬ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮০৬ জন প্রার্থী রয়েছেন।
৬১ জেলায় মোট ভোটার ৬৩ হাজার ১৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৮ হাজার ৩৪৩ জন এবং নারী ভোটার ১৪ হাজার ৮০০ জন।
ভোট কেন্দ্র ৯১৫টি ও ভোটকক্ষ ১ হাজার ৮৩০টি। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
নির্বাচনে গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে ভোট কেন্দ্রে মোবাইলসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকারভুক্ত প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ নির্বাচনের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এ নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। বেশির ভাগ প্রার্থী রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কাও রয়েছে।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত অংশ নেয়নি। তবে এ তিন দলের ভোটাররাই জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জেলা পরিষদে অনির্বাচিত প্রশাসকদের শাসন ক্ষমতার অবসান হতে যাচ্ছে। জেলা পরিষদের নেতৃত্ব যাচ্ছে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে।
২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেয়।
এবার প্রতিটি জেলা পরিষদ পরিচালনায় একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জনপ্রতিনিধি হতে যাচ্ছেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের পাহারায় থাকবে ২০ জন পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান, ব্যাটালিয়ান আনসার ও আনসার ভিডিপির সদস্য। কেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে বিজিবি ও র্যাব।
এছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং র্যাবের একটি করে মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। মোবাইল ফোর্সের একটি দল ভোট কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় নিবিড় টহল দেবে।
এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের জন্য এক প্লাটুন বিজিবি বা কোস্টগার্ড থাকবে। নির্বাচনে প্রতিটি জেলায় সর্বনিম্ন এক প্লাটুন থেকে সর্বোচ্চ ১২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকছে।
এছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন।
৬১টি জেলা পরিষদে নির্বাচনে আটটি সংস্থার ১ হাজার ৩৩৯ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে ৬টি সংস্থার স্থানীয় পর্যবেক্ষক ৯৬৩ জন ও তিনটি সংস্থার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ৩৭৬ জন।