খোলা বাজার২৪, বুধবার, ৪ জানুয়ারি ২০১৭: অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছারাই ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যদি ছাত্রসংসদ সক্রিয় থাকত তাহলে ২৫ বছরে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ২৫ জন নেতা তৈরি হতো। শৃঙ্খলা বজায় থাকত।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে ওবায়দুল বলেন, ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছারাই ছাত্রলীগ তথা শেখ হাসিনা সরকারকে বিতর্কিত করছে। তাদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগ যেন কোনো বিশেষ ব্যক্তিদের হাতিয়ার বা পকেট কমিটি না হয়ে উঠে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শিক্ষা, আচরণ, সাংগঠনিক যোগ্যতা ও কর্ম দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আদর্শ হয়ে উঠতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে জাতির জনকের যোগ্য উত্তরসূরী সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও টিউলিপ সিদ্দিকীর মতো অনুকরণীয় হতে হবে’, বলেন ওবায়দুল।
সংঘর্ষের দোহাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ
সম্প্রতি ছাত্রনেতাদের আধিপত্য বিস্তারের কারণে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ কথায় কথায় সংঘর্ষের দোহাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়, এটা মোটেই উচিত নয়। এটা চরমপন্থা। এটা মাথাব্যথার চিকিৎসা করতে গিয়ে মাথা কেটে ফেলার মতো অবস্থা। ছাত্রসংগঠন কোনো বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘যে বিশৃঙ্খলা করবে তাকে পুলিশের কাছে দেওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা চলবে না, তা হতে পারে না, তা চলবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করে অনির্দিষ্টকালের ছাত্রধর্মঘট ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে দেওয়া হবে না।’
আগামী নির্বাচলে বিএনপির পরাজয় নিশ্চিত মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির পরাজয়ই নিশ্চিত করে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের পরাজয় অনিবার্য।’
বিএনপির কোনো কথার প্রতিউত্তর দেওয়ার মতো অবস্থানে বিএনপি নেই বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির বুদ্ধিজীবীরা বিএনপিকে হাটুভাঙা দল বলে আর আমি বলি নালিশ পার্টি। তারা এখন দিশেহারা হয়ে প্রলাপ বকছে। তাই আওয়ামী লীগ নেতাদের বলব, তাদের সব কথার উত্তর দেওয়ার দরকার নেই।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপপ্রচারবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আব্দুল মান্নান, বাহলুল মজনু চুন্নু, ইসহাক আলী খান পান্না, মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুরি বেপারী, লিয়াকত শিকদার, মাহমুদুল হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, বদিউজ্জামান সোহাগ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল ইসলাম সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান, মোতাহের হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
জাতীয় সংগীত, ছাত্রলীগের থিম সং ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করেন ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিককর্মীরা। এরপর আলোচনা শেষে বেলুন উড়িয়ে র্যালির উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের।
র্যালিটি শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন, জিপিও হয়ে ২৩, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।