Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

63kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি ২০১৭: ওয়ালটন এলইডি টিভি ১৮তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে রাজশাহীর সঙ্গে ড্র করে প্রথম স্তরে উঠে গেছে রংপুর। শুক্রবার শেষ দিনে রাজশাহীর দেওয়া ২৪৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রংপুর ২ উইকেটে ১৯৬ রান তোলার পরই ড্র হয়ে যায় ম্যাচ। এই ম্যাচে বোনাসসহ ১০ পয়েন্ট পাওয়া রংপুরের মোট পয়েন্ট হয়েছে ৭২। ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা রাজশাহীকে আগামী মৌসুমেও আবার দ্বিতীয় স্তরেই থাকতে হচ্ছে। আগের দিনই প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেছে ঢাকা মেট্রো।

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রথম শ্রেণির এই প্রতিযোগিতার আগামী মৌসুমে প্রথম স্তরে খেলবে চ্যাম্পিয়ন খুলনা, ঢাকা, বরিশাল ও রংপুর। দিনের প্রায় ৫৬ ওভার বাকি থাকতে ২৪৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালোই এগোচ্ছিল রংপুর। উদ্বোধনী জুটিতে ১৪ ওভারে ৫৪ রান যোগ করে ফিরে যান লিটন দাস (৩০)। আরেক ওপেনার জাহিদ জাভেদ দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৮৬ রানের বড় জুটি। জাহিদ ৭০ করে ফিরলে ভাঙে এ জুটি।এরপর তৃতীয় উইকেটে মাহমুদুল ও নাসির হোসেন ১০.১ ওভারে ৫৬ রান তোলার পরই দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়।

মাহমুদুল ৫৪ ও নাসির ২৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে ৩ উইকেটে ৩১৩ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল রাজশাহী। আগের দিনের সঙ্গে আরো ৯০ রান যোগ করে ৭ উইকেটে ৪০৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে রাজশাহী। আগের দিনে সেঞ্চুরি করা মাইশুকুর ২১২ বলে ১৬ চার ও ২ ছক্কায় করেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৬০ রান। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনিই। এদিকে প্রথম স্তরে বৃহস্পতিবারই ওয়ালটন এলইডি টেলিভিশন ১৮তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে খুলনা বিভাগ। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ায় টুর্নামেন্টের উত্তেজনা

গতকালই প্রায় শেষ হয়ে যায়। তবুও ঢাকা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের ম্যাচে নজর ছিল অনেকেরই। ঢাকা বিভাগ কত রানে জয় পায় তা দেখার অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেটপ্রেমিরা। হতাশ করেনি মোহাম্মদ শরীফের নেতৃত্বাধীন ঢাকা বিভাগ। ইনিংস ও ৭৮ রানের ব্যবধানে বরিশালকে হারিয়েছে মোহাম্মদ শরীফ, শাহাদাত রাজীবরা। এ জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে থেকে এবারের লিগ শেষ করল ঢাকা বিভাগ। ৬ ম্যাচে ২ জয়ে ঢাকার সংগ্রহ ৫৪ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সমান সংখ্যাক জয়ে খুলনার পয়েন্ট ৫৮। বোলিং ও ব্যাটিংয়ে ৪ বোনাস পয়েন্ট বেশি পাওয়ায় টানা দ্বিতীয়বারের মত শিরোপার উঠেছে খুলনা বিভাগের ঘরে। ৪ উইকেটে ২৫৯ রান নিয়ে শুক্রবার শেষ দিনের খেলা শুরু করে বরিশাল বিভাগ।

আল-আমিন ৩২ ও সোহাগ গাজী ১৬ রানে ব্যাটিংয়ে আসেন। কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা। স্পিনার তাইবুর রহমান সোহান গাজীকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ব্যক্তিগত ১৭ রানে। হতাশ করেন আল-আমিনও। শেষ দিন মাত্র ৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেন তরুণ ক্রিকেটার। আল-আমিনের উইকেট নেন স্পিনার অপু। বরিশাল শিবিরে পরের আঘাতটিও করেন তাইবুর রহমান। মনির হোসেন বোল্ড হন স্পিনারের ভেল্কিতে। এরপর সালমান হোসেন বরিশালের হয়ে একাই লড়ে যান। তার ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে তিন’শ রান অতিক্রম করে বরিশাল। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ইসলামুল আহসান (৪) যখন আউট হন তখন বরিশালের রান ৩২১।

এর আগে জোড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে ৫৮৮ রানের বড় পুঁজি পায় ঢাকা বিভাগ। দলের হয়ে সাইফ হাসান ২০৪ এবং তাইবুর রহমান ২৪২ রান করেন। জবাবে পেসার শাহাদাত হোসেন ও স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেলের দারুণ বোলিংয়ে ১৮৯ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। ফলো অনে পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহরিয়ার নাফিসের ১০৪ রানে প্রতিরোধ গড়ে বরিশাল। কিন্তু অন্য কেউ দায়িত্বশীল ইনিংস না খেলায় বড় পরাজয়ে স্বাদ নিয়ে লিগ শেষ করতে হল বরিশালকে। দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে উত্তীর্ণ হওয়া বরিশাল এবার পয়েন্ট তালিকার তিনে থেকে লিগ শেষ করল। ২৪২ রানের নজকাড়া ইনিংস খেলার পাশাপাশি বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তাইবুর রহমান।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেট বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্রয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ড্র হলেও প্রথম ইনিংসে পাঁচ শতাধিক রান করায় ১০ পয়েন্ট পেয়েছে সিলেট। আর ৬ পয়েন্ট পেয়েছে চট্টগ্রাম। ফলে দ্বিতীয় টায়ারে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছে সিলেট। আর ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছে চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় টায়ারে প্রথম হয়েছে রংপুর বিভাগ। তাদের সংগ্রহ ৭২ পয়েন্ট। এই টায়ারে প্রথম হওয়ার কারণে তারা প্রথম টায়ারে উন্নীত হয়েছে। ৬৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে রাজশাহী বিভাগ দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অলক কাপালির অপরাজিত ২০০ ও ইমতিয়াজ হোসেনের ১৩৪ রানে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে সিলেট।

জবাবে চট্টগ্রাম তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২০ রান করে চট্টগ্রাম। ব্যাট হাতে নাফীস ইকবাল ৯৯ রান করেন। এ ছাড়া ইয়াসির আলী ৬০, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৫৯ ও ইফতেখার সাজ্জাদ ৪২ রান করেন। ২৩৫ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে সিলেট। ২৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। তাতে চট্টগ্রামের সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪০১ রান। সিলেটের এই ইনিংসে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন রুমান আহমেদ। ২৮ রান করেন জাকির হাসান। বল হাতে চট্টগ্রামের ইফতেখার সাজ্জাদ ৩টি উইকেট নেন। ৪০১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। আবু জায়েদের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন জসিমউদ্দিন। ৬৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় চট্টগ্রাম।

২৪ রান করে ফিরে যান নাফীস ইকবাল। ১০২ রানের মাথায় আউট হন সাজ্জাদুল হক। যাওয়ার আগে দলীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলে যান। এরপর ১৬৬ রানে চতুর্থ, ১৮০ রানে পঞ্চম, ২৪২ রানে ষষ্ঠ ও ২৫৩ রানে সপ্তম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ৮৮ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের রান যখন ২৬১ তখন উভয় দল ড্র মেনে নেয়। ব্যাট হাতে চট্টগ্রামের ইয়াসির আলী ৪১, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৪১, ইরফান শুক্কুর ৩৯ ও নাঈম হাসান ২৭ রান করেন। বল হাতে সিলেটের রাহাতুল ফেরদৌস ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট নেন আবু জায়েদ। ১টি করে উইকেট নেন ইমরান আলী ও অলক কাপালি। অপরাজিত ডবল সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন সিলেটের অধিনায়ক অলক কাপালি।