খোলা বাজার২৪,শনিবার, ৭ জানুয়ারি ২০১৭: শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ী অঞ্চলগুলিতে ঘন কুয়াশা ও শৈত প্রবাহের কারণে জন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ৩দিন থেকে ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশীর ভাগ সময় সূর্যের আলো চখে পড়ে না এবং একই সাথে চলছে হিমেল হাওয়া। ঘর কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে শীত রোগ আক্রান্ত হচ্ছে ছোট ছেলে-মেয়ে ও বয়-বৃদ্ধ লোকেরা। অত্র জেলার গ্রামগুলিতে শীতজনিত রোগ নিমোনিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা জ্বর ও বিভিন্ন রোগাক্রান্ত হয়ে বহু শিশু ও বয়-বৃদ্ধ লোক। শীত আক্রান্ত রোগীরা প্রতিদিন সরকারী হাসপাতালে এসে ভিড় করছে। হাসপাতালে শীত জনিত রোগের তেমন কোন ঔষধ না থাকায় দরিদ্র-অসহায় রোগীরা সরকারী চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই হাসপাতালে অবিলম্বে দরিদ্র রোগীদের জন্য শীত জনিত রোগের ঔষধ সরবরাহ করা অত্যান্ত জরুরী বলে মনে করছেন ভোক্তভোগীরা। প্রকাশ থাকে যে, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের দেখা মিলেছে দেরীতে। কিন্তু বর্তমানে শীতের তীব্রতা অনেক বেশী। দিন দিন শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। অসহায় দরিদ্র ছিন্নমূল, ক্ষেত মুজুর-দিনমুজুর ও নিম্ন শ্রেণীর মানুষেরা শীত নিবারণের জন্য অনেকেই সরকারী কম্বল বা শীত বস্ত্রের প্রত্যাশায় দিন গুনছে। আবার অনেকেই শীতের প্রচন্ডতার কারণে কম দামে পুরাতন কাপড়ের দোকান থেকে অল্প মূলে শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র ক্রয়করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু যারা একেবারেই নিম্ন আয়ের মানুষ তারা অনেকেই পুরান কাপড়ের দোকান থেকে অল্প দামেও শীতবস্ত্র কিনতে পারছে না। তাদের একমাত্র সহায় খরকুটার আগুন দিয়ে শীত নিবারন করছে। উল্লেখ্য, শেরপুর জেলা সীমান্ত ঘেষা হিমালয়ের পাদ দেশে অবস্থিত হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত সন্ধার পরে নেমে আসে ঘন কুয়াশার আচ্ছনে ঘেরা হিমালয়ের হিমেল হাওয়া আর মৃদু শৈত্র প্রবাহে শীতের তীব্রতা। ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শীতার্থদের জন্য সরকারী ভাবে ৭টি ইউনিয়নের জন্য ১১৯৬টি কম্বল বরাদ্দ পেয়েছে। ইতিমধ্যেই উক্ত বরাদ্দকৃত কম্বল ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভাজনের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত ইউনিয়ন পর্যায়ে ১১৯৬টি কম্বলের হিস্যানুযায়ী যে কম্বল পেয়েছিল তা বিতরণ করতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। কারণ শীতার্থদের তুলনায় শীতবস্ত্র সীমিত হওয়ায় এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।
অত্র উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ২লক্ষাধিক লোকের বসবাস। সিংহভাগ লোকই দরিদ্র কৃষক, শ্রমিক, দিনমুজুর,নিম্ন আয়ের মানুষসহ আদিবাসী কোচ, গাঢ়, হাজংসহ নানা সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। বর্তমানে বরাদ্দকৃত ১১৯৬টি কম্বল অত্র উপজেলার জন্য অতি নগন্ন। তাই সরকারী ভাবে আরও কম্বল বরাদ্দ প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করার জন্য দাবী জানিয়েছেন অত্র জেলার শীতার্থরা। ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭ইউপি চেয়ারম্যানগণ পিআইও আজিজুর রহমানকে শীতার্থদের জন্য আরও প্রয়োজনীয় সংখ্যাক শীতবস্ত্রের প্রয়োজন বলে অবহিত করেছেন। এ ব্যাপারে পিআইও আজিজুর রহমান উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করবেন বলে আশ্বাস দেন।