Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৯ জানুয়ারি ২০১৭:  43মুন্সিগঞ্জের পদ্মা নদীতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। টঙ্গিবাড়ীর হাসাইল টু দিঘিরপাড় পদ্মা নদীটি এখন ভাঙ্গন রোধ হলেও ভরা বর্ষার সময়ে ভাঙ্গনের আশংকা বেড়ে যায়। কিন্তু নদীটির বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে অভিরাম বালু উত্তোলন। নদীটির দক্ষিন প্রান্তে ফরিদপুরের নড়ীয়া উজেলার চরাঞ্চল। আর উত্তর প্রান্তে রয়েছে মুন্সিগঞ্জ পয়েন্ট ও সীমানা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার কোথাও কোন বালু কাটার কোন ইজারা দেয়নি জেলা প্রশাসন। তবুও অবৈধভাবে কামারখারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদার ক্ষমতার অপ- ব্যবহার করে পদ্মা নদীতে রাতের আধারে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে করে বড়াইল, সরিষাবন,বাঘবাড়ী, বীরতারাসহ কয়েকটি গ্রাম ও আশপাশ এলাকার ফসলী জমি হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিনে সরিষাবন এলাকার পদ্মার পাড়ে গিয়ে দেখা যায়,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদারের আল মদিনা ড্রেজার নামের একটি ড্রেজার নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। ছোট নৌকার সাহায্যে ড্রেজারের কাছে গেলে একজন মুরুবিব এগিয়ে এসে বলেন এটা মহিউদ্দিন সাহেবের ড্রেজার। আমার ছবি তুলবেন না আমি কিছু বললে আমার অসুবিধা হবে। নাম প্রকাশ করা হবেনা এমন প্রস্তাবে তিনি রাজি হয়ে বলেন, এখন চলবেনা রাতে চলবে । মাটি কি করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মাটিগুলো বালুবাহী বাল্গহেডের সাহায্যে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

স্থানীয় মুরুব্বি জানান, ফসলি জমি কেন আমাদের পৈত্রিক ভিটার মাটি কাঁটলেও আমাদের কোন প্রতিবাদ করার মত সাহস নেই কারো। যেখানে বর্তমান চেয়ারম্যান নিজেই তার ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে সেখানে আমরা সাধারন লোক প্রতিবাদ করে কি করবো। প্রতিবাদ করলে এলাকায় থাকতে সমস্যা হবে।

কৃষক আবুল হাশেম বলেন, গত বছর আমার ২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছিলাম । লাভবানও হয়েছিলাম। কিন্তু বর্ষার সময়ে অবৈধ ড্রেজিং এর কারনে জমিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি অন্যের জমিতে কাজ করি আর বর্ষার সময় নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করি। জেলা প্রশাসকের কাছে আমার দাবি আর যেন কোন কৃষকের জমি যেন নদীতে গিলে খেতে না পারে।

বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করে চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন,এটা আমার ড্রেজার তবে মুন্সিগঞ্জ সীমানায় বালু উত্তোলন করিনা। আমি শরিয়তপুর জেলা প্রশাসক থেকে অনুমোদন নিয়ে বালু উত্তোলন করছি। তিনি আরো বলেন, বাল্কহেড চললে নদী ভাঙ্গনের আশংকা নেই।

চেয়ারম্যানের কথার সুত্র ধরে শরিয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হোসেন এর সাথে ফেনালাপকালে তিনি বলেন, শরিয়তপুর জেলার কোথাও কোন বালু মহল ইজারা দেওয়া হয়নি। মুন্সিগঞ্জ সীমানাধীন সরিষাবন এলাকায় কামারখারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বালু উত্তোলন করছে বলে খবর পেয়েছি। শরিয়তপুর সীমানায় বালু কেটে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সহকারী কমিশনার ভূমি টঙ্গিবাড়ী আবেদা আফসারী বলেন, ঘটনাস্থলে নায়েবকে পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক রাজস্ব মোহাম্মদ ফজলে আজীম বলেন, বালু উত্তোলনের বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।