খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৭: দক্ষিণাঞ্চলবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে আগামী ১৫ জানুয়ারি রবিবার থেকে কাঁঠালবাড়ী ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরিঘাট আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। কাওড়াকান্দি থেকে কাঁঠালবাড়ীতে ঘাট স্থানান্তর করার ফলে পরিবহন খরচ ও যাতায়াতের সময় সাশ্রয় হবে।
বৃহস্পতিবার মুন্সীগঞ্জ জেলার শিমুলিয়া ঘাটে (মাওয়াঘাট) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পুনর্বাসিত ফেরি ‘কুমিল্লা’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান এ কথা বলেন।
বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান জ্ঞান রঞ্জন শীলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধর রায়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক এবং লৌহজং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদার।
নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নৌ পরিবহন সেক্টরের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করে। যার আওতায় বিআইডব্লিউটিসি পরিচালিত বিভিন্ন সেবার মান উন্নয়নে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৫টি নতুন জলযান নির্মাণ ও সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৭টি ফেরি, ১২টি ওয়াটার বাস, ২টি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী জাহাজ, ৪টি সী-ট্রাক এবং ১০টি পল্টুুন রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৪টি কন্টেইনারবাহী জাহাজ, ২টি উন্নতমানের কে-টাইপ ফেরি, ২টি মিনি ইউটিলিটি ফেরি, ২টি অভ্যন্তরীণ জাহাজ ও ২টি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজসহ ১২টি নতুন জলযান নির্মাণের কাজ চলমান আছে। প্যাসেঞ্জার ক্রুজার, আধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ, অয়েল ট্যাংকার, ফায়ার-ফাইটিং কাম-স্যালভেজ টাগসহ বিভিন্ন ধরণের আরও ৩৬টি জলযান নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
শাজাহান খান বলেন, অধিক সংখ্যক জলযান সার্ভিসে নিয়োজিত করার ফলে ঢাকা-বরিশাল রুটে আধুনিক জাহাজের মাধ্যমে যাত্রী সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন ফেরি ঘাটে ক্রমবর্ধিত যানবাহনের চাপ মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে।
২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ফেরি সার্ভিসে ২৫ লাখ ৯৯ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা পূর্ববর্তী অর্থবছর (২০১৪-১৫) থেকে ১২ দশমিক ৩৬ ভাগ বেশি।
নৌ মন্ত্রী বলেন, নতুন জলযান নির্মাণের পাশাপাশি ৫৩ কোটি ২২ লাখ টাকায় ৪টি রো রো ফেরি, ২টি কে-টাইপ ফেরি ও ৬টি পল্টুুন পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয়ে ২টি পুরাতন মিডিয়াম ফেরি ‘কুমিল্লা’ ও ‘ঢাকা’ পুনর্বাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ৪ কোটি টাকায় ফেরি ‘কুমিল্লা’ পুনর্বাসনের কাজ সন্তোাষজনকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফেরি ‘কুমিল্লা’ পুনর্বাসনে চার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এতে ডেকের জায়গা ও উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গাড়ির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বড় বাস ও ট্রাক সহজে লোড করা যাবে। ভিআইপি যাত্রী পারাপারসহ ফেরিটি দিয়ে অধিক সংখ্যক রাউন্ড ট্রিপ প্রদান করা সম্ভব হবে। সেই সাথে সংস্থার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
আরো জানা গেছে, প্রকল্পভুক্ত ফেরি দু’টি ১৯৬৩ সালে নির্মিত। ফেরি দু’টি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় এগুলো দ্বারা সার্বক্ষণিক যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হতো না। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এগুলো দ্বারা সার্ভিস পরিচালনা করা হতো। এর ফলে জ্বালানী ও মেরামত ব্যয় বৃদ্ধিসহ ফেরি দু’টি কাঙ্খিত পর্যায়ে রাজস্ব অর্জন করা সম্ভব হতো না। এ অবস্থায় ২০১৫ সালে ফেরি দু’টি পুনর্বাসনের আওতায় নেয়া হয়। দুু’টি ফেরির মধ্যে ফেরি ‘কুমিল্লা’ পুনর্বাসন কাজ সফলভাবে সম্পন্নের মাধ্যমে শিমুলিয়া সেক্টরে যানবাহন নিয়োজিত করা হয়েছে। অপর ফেরি ‘ঢাকা’ পুনর্বাসন শেষে এ বছরের এপ্রিলে, শিমুলিয়া সেক্টরে নিয়োজিত করা হবে।