খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৭: শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে সরকারী বরাদ্দকৃত শীতবস্ত্র (কম্বল) শীতার্থদের মাঝে বিতরণ করেছেন। অত্র উপজেলায় প্রথম ধাপে ৬৬৫টি শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে ২য় দফায় বরাদ্দকৃত ১১৯৬টি শীতবস্ত্র (কম্বল) বিভাজনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারী ভাবে প্রাপ্ত ১ম ও ২য় দফার বরাদ্দকৃত শীতবস্ত্র (কম্বল) ইউনিয়ন পর্যায়ে শীতার্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বর্তমানে ৩য় ধাপের বরাদ্দকৃত ১২২৫টি শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। সর্বমোট ৩০৭৬টি কম্বল এ পর্যন্ত অত্র উপজেলার ২লক্ষাধিক লোকের মাঝে বিতরণের জন্য সরকারী ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় যা অপ্রতুল।
উল্লেখ্য, শেরপুর জেলার মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলার অধিকাংশ লোক দরিদ্র, অসহায়, শ্রমিক, আদিবাসী, গারো কোচ, হাজং ও নি¤œ আয়ের মানুষ। যাদের অধিকাংশদের পক্ষে শীতবস্ত্র ক্রয় করতে সক্ষম নয়। আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচন্ড শীতের কারণে কোন উপায় না থাকায় অল্প দামে ফুটপাত থেকে পুরাতন শীতবস্ত্র ক্রয় করে শীত কাটাচ্ছে। আবার কারও এইটুকু সামর্থ না থাকায় খরকুটু দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে। তাই এ দরিদ্র অসহায়, ছিন্নমূল, দরিদ্র, দুস্থ্য শ্রমজীবি, দিনমুজুর, প্রতিবন্ধী ও বয়-বৃদ্ধ মানুষেরা সরকারী শীতবস্ত্র কম্বল প্রাপ্তির আশায় উপজেলা কার্যালয়ে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী চেয়ারম্যান, মেম্বারদের নিকট ধন্ন্যা দিচ্ছে। অত্র উপজেলার সিংহ ভাগ লোক দরিদ্র ও শ্রমিক। যারা প্রতিদিন কাজ করে দিন এনে দিন খাঁয়। তাদের পক্ষে বাড়তি আয় না থাকায় দু’বেলা খাবার ছাড়া বাড়তি খরচ করার সুযোগ তাদের হাতে নেই। উল্লেখ্য, দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে শেরপুর জেলা দরিদ্রের সংখ্যা তুলনা মূলক ভাবে বেশী। দরিদ্রর সংখা কমাতে হলে কর্মসংস্থানের পথ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই অত্র উপজেলার নাচন মহুরী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারিকের ছেলে মাসুদুর রহমান মাসুদ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের নেতা বলেন, ফার্মাস ব্যাংকের অডিট চেয়ারম্যান মাহবুব আলম বাবুল চিশতি শেরপুর জেলার জন্য একটি গর্ব করার ব্যক্তিত্ববান লোক। উক্ত বাবুল চিশতি অত্র শেরপুর জেলাসহ দেশের জন্য বেকার ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অত্র এলাকাসহ দেশের বহু বেকার যুবকের কর্ম সংস্থানের পথ সুগম করেছেন। তাই সরকার উক্ত বাবুল চিশতি’র কর্মকান্ডের প্রতি সু-দৃষ্টি ও সহযোগীতা প্রদান করলে অত্র শেরপুর জেলাসহ দেশের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের পথ আরও সুগম হবে। তাই বেকারত্ব হ্রাস পেলেই দরিদ্রের সংখ্যা কমে আসবে।
প্রকাশ থাকে যে, আজ রাংটিয়া গ্রামের মৃত-মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী বৃদ্ধা তুফানো বেগম (১১৭) ১টি শীতবস্ত্র সংগ্রহের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা’র নিকট আসেন। পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমানকে ওই বৃদ্ধাকে শীতবস্ত্র (কম্বল) প্রদানের নির্দেশ দেন। পরে তুফানো বেগমকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীতবস্ত্র তার হাতে তুলে দেন।
অভিযোগে প্রকাশ, ওই বয়বৃদ্ধ ১১৭ বছর বয়সেও তুফানো বেগম এখন পর্যন্ত বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়া হয়নি। তাহলে আর কত বছর বয়স হলে তুফানো বেগম বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবে। এমন প্রশ্ন রেখে বৃদ্ধ মহিলাটি শীতবস্ত্র নিয়ে বাড়ি চলে যায়। অত্র উপজেলার সিংহভাগ লোক দরিদ্র। গত ৭দিন যাবত ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে প্রচন্ড শীত বিরাজ বরছে অত্র সীমান্তবর্তী উপজেলায়। তাই শীত মোকাবেলায় অনেক দরিদ্র ছিন্নমূল পরিবাররা হিমশিম খাচ্ছে। তাই তাদের দিক বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ২লক্ষাধিক লোকের বিপরীতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমন প্রত্যাশা শীতার্থদের।