খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ও কোলা ইউনিয়নে দুই হাজার একর পরিত্যক্ত একটি বিলকে ঘিরে ১৬ গ্রামের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তারা আর রাজনৈতিক কোন ব্যক্তির কাছে ধরনা দেবেন না বলে শপথ নিয়েছেন। এখন থেকে তারা নিজেদের কাজ নিজেরাই করবেন। পরিত্যক্ত বিলের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তারা উন্নতি ঘটাবেন নিজেদের ভাগ্যের। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হরিগবিন্দপুর মাঠে প্রায় ৪শতাধিক নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে ভাগ্য বদলের এই শপথ করেন। কালীগঞ্জ জৈব্য চাষী সমবায় সমিতির উদ্দোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জৈব চাষি সমবায় সমিতির সভাপতি মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, ভিশন ফোরাম ২০২১ এর সদস্য সচিব আতাউর রহমান মিটন, অধ্যাপক গোপিকান্ত সরকার, অধ্যাপক আবু সাইদ, মানিকগঞ্জ বায়োভিলেজ বাস্তবায়ন কমিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএ মান্নান, এ্যাড: মিজানুর রহমান ও ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম। সমাবেশে যোগা দেওয়া মল্লিকপুর গ্রামের বলাইলাশক উৎপাদক আসাদুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার টয়ের খালী বিলকে ঘিরে এলাকাবাসি ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। তিনি আরো জানান, কয়েক হাজার একর আয়তন বিশিষ্ট্য পরিত্যক্ত এই বিলে সমবায় ভিত্তিত্বে মাছ চাষ ও ধান আবাদ করলে এলাকার ১৬ গ্রামের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন হবে। এ জন্য কারো দারস্থ হতে হবে না। কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের কৃষক এমদাদ হোসেন মাষ্টার জানান, টয়ের খালী বিলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি পতিত থাকে। সেখানে কোন ফসল হয় না। বর্ষা মৌসুমে তারা একত্রিত হয়ে বিলে মাছ চাষ ও শুস্ক মৌসুমে ধান চাষ করবেন বলে শপথ নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত খৈল, কেচো সার ও গোবর সর পতিত থাকায় ফসল আবাদের সময় সার কম লাগবে। ফলে কৃষকদের রাসায়নিক সার ব্যবহার হ্রাস পাবে। এছাড়া তারা ঔষধি ও ফলজ বৃক্ষ রোপন করে তাদের চাহিদা মিটাবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। এলাকাবাসি জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট, কোলা ও নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মাঝামাঝি ওনিমানপুর, মোস্তাপুর, বলাকান্দর, মথুরাপুর, কামালহাট, রঘুনাথপুর, বলরামপুর, কুড়–লিয়া, নিয়ামতপুর, মল্লিকপুর, দৌলতপুর, ভোলপাড়া, খড়িকাডাঙ্গা, হরিগবিন্দপুর, মহেশ্বরচাদা ও মহিষাডেরা গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত টেয়েরখালি বিল। এই বিলে ৩০০ কৃষকের জমি রয়েছে। কৃষকরা সমবায় ভিত্তিত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে চাষ করলে পরিত্যক্ত টয়ের খালী বিলে সোনা ফলবে বলে সেখানকার মানুষের বিশ্বাস। শুক্রবার সমাবেশ শেষে আতাউর রহমান মিটনকে সভাপতি করে ১০০ সদস্য বিশষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি ১৬টি গ্রামে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গ্রাম কমিটি গঠন করে সমবায় ভিত্তিত্বে জমি চাষ করার বিষয়ে এলাকার কৃষকদের সচেতন করবেন।