
খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭: প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র ধ্বংস করার একদলীয় শাসন প্রবর্তনের ভয়ংকর রাস্তা থেকে সরে গিয়ে গণতন্ত্রের মুক্ত পথে চলার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের ৩ বছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রতিক্রিয়া দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করবার জন্য বিরোধী দল গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আগামী নির্বাচন, এবং রাজনীতির গতিপথ নির্দ্ধারণ করবেন। নতুন আশার আলো দেখাবেন। অন্যথায় জনগণের কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা তো নির্বাচন অংশ নিতে চাই। কারন আমরা বিশ্বাস করি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা হতে পারে। সেজন্যে প্রয়োজন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারনে নির্বাচন কালীন সময়ে নিরপেক্ষ একটি সহায়ক সরকারের অধিনে একটি নিরপেক্ষ, সাহসী, যোগ্য নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্বাচন। সে জন্য তৈরী করতে হবে একটি Level Playing Field বর্তমানে যে বিরোধী দল নির্মূল করার প্রক্রিয়া চলছে তা বন্ধ করতে হবে। সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা, মিছিল, সমাবেশ করার সমান সুযোগ দিতে হবে। গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এক কথায় একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনীতিকে তার স্বাভাবিক চলার পথে চলতে দিতে হবে। উন্নয়নের কথা বলে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা জনগণ কোনদিনই মেনে নেবেনা।
মির্জা ফখরুল বলেন, জঙ্গীবাদ প্রকৃত পক্ষেই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করছে। দলীয় সংকীর্নতার উদ্ধে ওঠে এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরী করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছিলো সময়ের প্রয়োজন। অথচ তা না করে বিরোধী দলকে দায়ী করে বিভক্তি সৃষ্টি জঙ্গীবাদকে আরো প্রশ্রয় দিচ্ছে। প্রকৃত সত্য অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। ক্রস ফায়ার, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, খুন, পুলিশী হেফাজতে হত্যা, মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানী, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনীয় করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণের শুরুতেই জাতিকে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ২০১৪এর ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের কথা বলেছেন, যা সঠিক নয়। ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারি ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্ধতায় নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়েছিল। ৫% ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায়নি। সারা দেশের মানুষ এবং বর্হিবিশ্ব সেই নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছিল সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে বন্ধুকের মুখে জিম্মি করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি এবং আরও অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও সেটা গ্রহণ করা হয়নি। সেই সময়কার তামাশা ও নাটক সকলের মনে থাকার কথা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান,প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।