Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭:  36মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির বন্ধ দুয়ার আগামী সপ্তাহেই পুনরায় খুলছে।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার মালয়েশিয়া সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ের মাধ্যমে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নেয়া শুরু করবে। এর মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
জানতে চাইলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম শাখার কাউন্সেলর মো. সাইয়েদুল ইসলাম রোববার রাতে জানান যে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন যে মেশিনে কর্মী নিয়োগ করা হয় সেই মেশিনটি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর তা সঠিকভাবে কাজ করলে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ শ্রমবাজার চালু করবে।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশ থেকে বেশি সংখ্যায় কর্মী নেয়া বন্ধ করে মালয়েশিয়া। তারপর ২০১২ সালে দু’দেশের সরকার জিটুজি চুক্তি করে সরকারি পর্যায়ে কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
ওই সময়ে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিবাসন ব্যয় কমলেও কর্মী পাঠানোর সংখ্যা খুবই কম হয়। জিটুজি পদ্ধতিতে সবমিলিয়ে ১০ হাজারের কম কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানো সম্ভব হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির আন্তরিক প্রচেষ্টায় নতুন করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশীদের জন্যে ব্যাপক হারে চালু হতে যাচ্ছে।
সূত্র মতে, ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া জিটুজি প্লাস চুক্তি সই করে। এ চুক্তির আওতায় বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ বিষয়ে উভয় দেশের সরকারের কড়া নজরদারি থাকবে।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সিলর আরও জানান, সম্পূর্ণ অনলাইন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। নিয়োগকারীরা চাহিদা দেবে আর তার ভিত্তিতে অনলাইনে নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এখানে কারও তদবিরের কিছু থাকবে না। যে মেশিনে এ রিক্রুটিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে এখন সেটা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে জিটুজি প্লাস চুক্তি সই হওয়ার পর মালয়েশিয়ার তরফে বলা হয়েছিল যে, বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন মুক্ত বাজারের যুগ। কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরবরাহ দেবে। কোনো সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলা যাবে না। তবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা খুব বেশি। কারণ, বাংলাদেশী কর্মীদের কর্মদক্ষতা, কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আইন মেনে চলা, কঠোর পরিশ্রমী হওয়ায় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মীরা অনেক বেশি সমাদৃত। ফলে বাংলাদেশের কর্মীদের চাহিদা খুব বেশি।’
মালয়েশিয়া কোন কোন খাতে কর্মী নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া ১৯৮৬ সাল থেকেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়ে থাকে। কিন্তু তখন বাংলাদেশকে তার কর্মী নিয়োগের সোর্স কান্ট্রি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তখন মালয়েশিয়ার কর্মীর জন্য ১৪টি সোর্স কান্ট্রি ছিল। এখন বাংলাদেশ ১৫তম সোর্স কান্ট্রি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশ সব খাতেই কর্মী পাঠাতে পারবে। তবে এ মুহূর্তে ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ প্লান্টেশন খাতে কর্মীর চাহিদা বেশি।’
কর্মীদের মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ব্যয় কত হবে জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, ‘এটা বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত হয়। কুয়ালালামপুরে হাইকমিশন নির্ধারণ করে না। তবে অভিবাসন ব্যয় কম হবে বলেই সবাই আশা করে।’
কর্মীদের নিম্নতম মজুরি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার শ্রম আইন মোতাবেক সর্বনিম্ন মজুরি হবে এক হাজার রিঙ্গিত। তার চেয়ে কম হবে না।’