খােলা বাজার২৪, বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭: দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে আজ বুধবার বঙ্গভবনে তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রপতি এই আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সহকারী প্রেস সচিব মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আজ বিকেলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টির প্রতিনিধিদল। এর মধ্যে মুসলিম লীগ ইসিতে একজন নারী কমিশনার নিয়োগসহ চার দফা প্রস্তাব দেয়। জাকের পার্টি আট দফা ও ইসলামী ফ্রন্ট ছয় দফা প্রস্তাব দেয়।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিকেলে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মান্নানের নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করতে যায়।
নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আলোচনায় বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তাঁরা নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। ইসলামী ফ্রন্টের প্রতিনিধিদল জানায়, স্বাধীন, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারে। আলাদা কমিশন সচিবালয় গঠন এবং কমিশন সচিবালয়কে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাবও দেন নেতারা। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে যার মাধ্যমে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।
ঢ়ৎবংরফবহঃ ধনফঁষ যধসরফ ২ নফহবংি২৪ঁং
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও প্রস্তাব শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
একই দিন বিকেলে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান খানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের এবং জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সলের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল পৃথকভাবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়।
নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আলোচনায় বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল সভাপতি রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দেশে উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি। তাঁরা নির্বাচন কমিশন গঠনে চার দফা প্রস্তাব পেশ করেন। তাঁরা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও বাস্তবায়নে দৃঢ় মনোবৃত্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন। তাঁরা একজন নারী কমিশনার নিয়োগেরও প্রস্তাব করেন। প্রতিনিধিরা আশা প্রকাশ করেন যে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির এ উদ্যোগ সফল হবে এবং দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আলোচনায় বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানো এবং এ মহতী উদ্যোগের জন্য জাকের পার্টির চেয়ারম্যান রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। এর ফলে সংবিধান অনুযায়ী একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে। তাঁরা নির্বাচন কমিশন গঠনে আট দফা প্রস্তাব পেশ করেন। তাঁরা প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। তাঁরা একটি স্বাধীন, স্বতন্ত্র এবং আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করেন। প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনে একটি গবেষণা উইং স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন।
ঢ়ৎবংরফবহঃ ধনফঁষ যধসরফ ৩ নফহবংি২৪ঁং
রাষ্ট্রপতি প্রতিনিধিদলকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, এরই মধ্যে বিভিন্ন দল সার্চ কমিটি এবং নির্বাচন কমিশন গঠনে সুচিন্তিত প্রস্তাব ও মতামত পেশ করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব প্রস্তাব ও মতামত বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে। তিনি দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন ও রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন। এ পর্যন্ত ৩১টি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা করেছে।