খােলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৭: শেরপুরের বিভিন্ন উপজেলায় এবছর শীতকালিন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু গত ৭দিনের ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড শীতের কারণে সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। যেসমস্ত সবজি শীত আর ঘন কুয়াশায় ক্ষতি হয়েছে তন্মধ্যে আলু, ফুলকপি, বাধাঁকপি, শীম, টমেটো, মূলা, গাজর, পুটল কাকরুল জিঙ্গে, কদু বরবটিসহ অন্যান্য সবজি ব্যাপক ভাবে ক্ষতি সাধিত হয়। ফলে সবজির আমদানি কমে যায় ব্যাপক ভাবে। তাই সবজির দাম এখন লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতি কেজি সবজির মূল্য এখন ২/৩গুন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকাশ থাকে যে, শীত মৌসুমের যে সমস্ত সবজি বাজারে চাহিদা রয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী কৃষকেরা সবজি উৎপাদন করে বাজারে ভাল দামে বিক্রি করে তারা অনেক লাভবান হচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে গত ৭দিনের ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে সবজির ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে সবজির উৎপাদন কমে যাওয়ায় চড়া দামে সবজি বিক্রি করেও কৃষকরা লাভবান হতে পারবে না। শীতকালিন মৌসুমে প্রথমদিকে যেসমস্ত সবজি চাষ করেছে কৃষকরা সেগুলি হলো-আলু, বেগুন, টমেটো, শীম, কড়ল্লা, বরবটি, ফুলকপি, বাধাঁকপি, কোমড়, পুটল, মিষ্টি কোমড়া, গাজর, ডাঙ্গা, মুলা, লাল শাক, পালং শাক, সরিষা শাক, লাউসহ আরও বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ করেছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষকের চাহিদানুযায়ী মূল্য পেয়েছিল। প্রকাশ থাকে যে, অন্যান্য সবজির চেয়ে ফুলকপি’র বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর কারণে উৎপাদিত সবজি ক্ষতিরগ্রস্থ্য হলো। যদি অত্র এলাকায় এসমস্ত সবজি সংরক্ষনের জন্য সরকারী ভাবে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে হিমাগার থাকতো তাহলে হয়তো প্রথম পর্যায়ের উৎপাদিত সবজিগুলি সংরক্ষন করা যেত হিমাগারে। কিন্তু হিমাগার না থাকায় কৃষকের উৎপাদিত সবজি নষ্ট হয়েছে এবং আবার বাড়তি কিছু সবজি পানির দামে বিক্রি করতে হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বাগুন প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা ছিল, বর্তমান মূল্য ৩০-৪০ টাকা কেজি, প্রতি পিছ কফির মূল্য ১০-১৫ টাকা, বর্তমান মূল্য বেড়ে ২৫-৩০ টাকা, শীম প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা, বর্তমান মূল্য ৩০-৪০ টাকা, মূলা প্রতি হালী ৮-১০ টাকা ছিল, বর্তমান মূল্য ১৫-২০ টাকা, টমেটো ১৫-২০ টাকা, বর্তমান মূল্য ২৫-৩০ টাকা, বিভিন্ন প্রকারের শাক প্রতি কেজি ১০-১৫ টাকা, বর্তমান মূল্য ২০-২৫ টাকা দড়ে এসে দাড়িয়েছে। পাশাপাশি প্রতি পিছ লাউ ১৫-২০টাকা এখন ২০-৪০ টাকা। এভাবে প্রায় সবজিরগুলি দাম ২/৩গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সবজি উৎপাদন ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য, অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকই নানা জাতের সবজি চাষ করে তাদের সংসারের নানা চাহিদা মেটানোসহ বাড়তি আয় করে থাকে। এবছরের প্রথমদিকে সবজির উৎপাদন ভাল থাকলেও বর্তমানে প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ল সবজি চাষীরা।
এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা আলহাজ্ব মো. কোরবান আলী জানান, প্রথমদিকে সবজির বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হয়েছিল। কিন্তু অধিক উৎপাদিত সবজি হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণের অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। যদি উপজেলা পর্যায়ে সরকারী ভাবে একটি করে হিমাগার থাকতো তাহলে হয়ত কৃষকদের উৎপাদিত সবজিগুলি হিমাগারে সংরক্ষণ করা যেত। তাহলে সবিজও নষ্ট হতো না কৃষকরাও উৎপাদিত সবজি সংরক্ষন করে পরবর্তীতে বাজারজাত করে লাভবান হতো। তাই অত্রাঞ্চলের কৃষকদের দাবী তাদের উৎপাদিত সবজি সংরক্ষনের জন্য উপজেলা পর্যায়ে সরকারী ভাবে একটি করে হিমাগার স্থাপন করা অতিব জরুরী দরকার।