খােলা বাজার২৪, রবিবার, ২২ জানুয়ারি ২০১৭: তাপস কুমার, নাটোর: বাঁশ দিয়ে তৈরি চাটাই ওদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। জমি-জমা অথবা তেমন কর্মযজ্ঞ নেই ওদের। বংশ পরম্পরায় পাওয়া চাটাই শিল্পকে আকঁরে ধরে বেঁচে আছে নাটোরের সিংড়া পৌর এলাকার গোডাউন পাড়া মহল্লার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার।
বাঁশ দিয়ে তৈরী চাটাই শিল্প এ মহল্লার বেশির ভাগ মানুষেরই একমাত্র পেশা। এখানে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সাচ্ছন্দে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এ কাজে বাড়ির বউ-ঝি থেকে শুরু করে, স্কুল, কলেজ পড়–য়া ছেলেমেয়েরাও লেখাপড়ার পাশাপাশি বড়দের কাজে সহযোগিতা করে থাকে। এসব চাটাই যাচ্ছে দেশের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বছরের পর বছর তারা বাঁশ দিয়ে চাটাই তৈরির পাশাপাশি ডালি, কুলা, ধান রাখার ডোল, ঘরের চাতাল তৈরি ও মাছ ধরার উপকরণ তৈরি করছে। চাটাই তৈরীর কারিগর মিনা, ময়না জানান, দিনের অধিকাংশ সময় তারা দলবেঁধে বাড়ির আঙিনায় বসে চাটাই তৈরী করেন। একসঙ্গে বসে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে নানা ধরনের খোশগল্পসহ মোবাইলে গান শোনা, রেডিও’র খবর শোনেন তারা।
ষাটর্ধো ইসমাঈল হোসেন এ প্রতিবেদক কে জানান, মাঝারি সাইজের একটি বাঁশ কিনতে এখন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা লাগে। প্রতিটি মাঝারি এসব বাঁশ থেকে ১-২টি চাটাই তৈরি করা যায়। তবে আগের মত এখন আর তেমন একটা লাভ হয় না। শুধু মাত্র জীবিকার তাগিদে এসব কাজ করছেন। তকে কেউ কেউ অন্য পেশায় চলে গেছেন।
স্থানীয় কলেজ ছাত্রী মুক্তি ইয়াসমিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি বড়দের এ কাজে সহযোগিতা করে বাড়তি উর্পাজন করা যায়। চাটাই কারিগর মাজেদা বেগম জানান, গ্রাহকের চাহিদার প্রয়োজনে বিভিন্ন মাপের চাটাই তৈরি করা হয়। এরমধ্যে ৫ ফুট প্রশন্ত ও ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি চাটাই এখন ১৩০ থেকে ১৪০ থেকে টাকায় বিক্রয় করেন। ওই মাপের একটি চাটাই তৈরি করতে একটি বাঁশের অর্ধেক অংশ প্রয়োজন এবং একজন শ্রমিকের আধাবেলা সময় লাগে।
অপর চাটাই কারিগর লুৎফা বেগম জানান, বর্তমানে বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাটাই তৈরীতে খরচ কিছুটা বেশী হচ্ছে। সেই সাথে অর্থের অভাবে তারা চাহিদা মাফিক বাঁশ কিনতে পারছেন না। সরকারি অথবা বেসরকারী সহায়তা পেলে চাটাই শিল্প রক্ষা ও প্রসার করা সম্ভব।