খােলা বাজার২৪, সোমবার, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭: কটি উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়েই গত শনিবার ওয়াশিংটনে আয়োজন করা হয় ‘উইম্যান মার্চ’। সেই উদ্দেশ্যটি হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ। সেই সঙ্গে ছিল রাগ আর ক্ষোভ। শুধু ওয়াশিংটন নয়, একই অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ২০ লাখ নারী গত শনিবার সকালে রাস্তায় নেমে আসে। মুখ্য উদ্দেশ্য একটি হলেও এর পাশাপাশি উঠে আসে আরো বেশ কিছু কারণ। মিছিলে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন নারী তেমনই কিছু কারণ জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে।
ক্ষোভ : ব্র“কলিনের ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজের ডিজাইনার জেনিফার বেহর। মাথায় গোলাপি পুশি টুপি (এই মিছিলের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত)। ৪২ বছর বয়সী এই ডিজাইনার বলছিলেন, ‘বহু নারী রাস্তায় নেমেছেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ। ‘ এর মাধ্যমেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান সংখ্যাগুরু কংগ্রেসকে জানিয়ে দেওয়া যাবে, ‘তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে না। নারীর সঙ্গে ট্রাম্প যে আচরণ করেন তাতে আমি ক্ষুব্ধ। ‘
ইতিহাসের অংশ : হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এই মিছিলে যোগ দেয়। তারা এসেছিল শিকাগো থেকে বাসে চেপে। সামনে টাঙানো ব্যানারে লেখা, ‘‘ইলিনয় ইয়ুথ গ্র্যাব ‘এম বাই দা’। নিচেই একটি বিড়ালের ছবি। এই বাসেই এসেছে ১৬ বছর বয়সী মারিয়া ইমান। বলছিল, ‘আমি ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে গিয়েছি। এক দিন আমি আমার সন্তানদের এই মিছিলের গল্প বলব’। ”
তিনি আত্মপ্রেমী : সান ফ্রান্সিসকো থেকে পাঁচ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মিছিলে যোগ দিতে রাজধানীতে আসেন ক্রিস্টিনা কগলিন (৩৯)। তিনি বলেন, ‘আমি শিখেছি নিরাপত্তার সঙ্গে সমঝোতা করা যায় না। কিছু বিষয় নিয়ে আমাকেও দাঁড়াতে হবে। ‘ তাঁর বন্ধু তানিয়া গ্যাক্সিয়োলা (৩৯) এসেছেন আরিজোনা থেকে। তানিয়া বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) আত্মপ্রেমী এবং সব কিছুতেই অনুমোদন খোঁজেন। তাঁকে অনুমোদন করা হয়নি—এই বিষয়টি বুঝিয়ে দিতেই এই আয়োজন। আশা করি তিনি বিষয়টি বুঝবেন, আশা করি আজকের মিছিল তাঁর নজরে পড়বে। ‘
অধিকার রক্ষার আন্দোলন : ৭২ বছর বয়সী তৃষ্ণা নরম্যান আসেন নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে। তাঁর হাতে একটি প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা ‘গ্যাসলাইটার ইন চিফের কাছ থেকে সাবধান। ‘ ভবিষ্যতে ভুল সিদ্ধান্ত, মিথ্যাচার, দ্বিধা আর সন্দেহের কথা ভেবেই এই ব্যঙ্গাত্মক অভিধা দেওয়া। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের অধিকার বাঁচাতে চাই। দেখাতে চাই, মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ হয় তখনই তারা শক্তিশালী। ‘
মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয় : নরম্যানের সঙ্গে তাঁর বোন বারবারা হিলটনও (৬২) ছিলেন। বলছিলেন, ‘আমার স্বামীর পরিবার অভিবাসী। তাঁরা মুসলমান। সন্ত্রাসী নয়। ‘
বর্ণবাদ ফেরার আশঙ্কা : কিম লি-উইলকিন নামে ৬০ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ নারীর আশঙ্কা অবশ্য অন্যত্র। তিনি ভাবছিলেন, অতীতের সেই বর্ণবাদী দিনগুলো হয়তো আবার ফিরে আসবে। ট্রাম্প ওবামাকেয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়াতেও উদ্বিগ্ন তিনি। বলছিলেন, ‘বেশির ভাগ আমেরিকানই মানবাধিকার, ধর্মীয় অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। এ কারণেই আজ এখানে এত লোক সমবেত হয়েছে। ‘
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্ব করেন না : নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত মিছিলে দুই সন্তানের হাত ধরে এসেছিলেন মারা নাম্যান। ৪২ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘আমি চাই না পুরো বিশ্ব ভাবুক যে ট্রাম্প আমাদের সবার প্রতিনিধিত্ব করছে। যখন আপনি দেখবেন এত নারী একসঙ্গে রাস্তায়, বুঝতে পারবেন চাইলেই আমাদের ঠকানো যাবে না।
